স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ‘বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে’র সমাপনী অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষে ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (১ আগস্ট) বিকেলে মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদরের এ.সি. লাহা মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
এসময় স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হোসেন সামনেই এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ওবায়দুর রহমান টিটুসহ কয়েকজন গুরুত্বর আহত হয়েছেন।
প্রতক্ষদর্শীরা জানান, টুর্নামেন্টে’র ফাইনাল খেলা শুরুর আগে অতিথিরা খেলার মাঠে প্রবেশের সময় বিদ্যালয়ের গেটে বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগের অন্যতম সহ-সভাপতি ও মোরেলগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুমনের নেতৃত্বে দশ-বারো জন যুবক উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতির সমর্থকদের উপর হামলা চালায়।
এক পর্যায়ে পরিস্থিতি শান্ত করে প্রধান অতিথি মাঠে প্রবেশ করেন এবং উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতিসহ অন্যান্যদের নিয়ে মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন। এসময় সুমন ও জুয়েলের নেতৃত্বে এক দল যুবক মঞ্চের উপর উঠে পড়ে। তারা প্রধান অতিথির সামনের টেবিলে উঠে ওবায়দুর রহমান টিটুকে লাথি দিয়ে চেয়ার থেকে ফেলে দেয় এবং এলোপাতাড়ি মারধর করে।
এসময় ওবায়দুর রহমান টিটু, জুয়েলসহ অন্তত ৭ জন আহত হয়।
গুরুতর অবস্থায় ওবায়দুর রহমান টিটুকে হাসপাতালে নেয়ার পথে মোরেলগঞ্জ উপজেলার এস.এম. কলেজ মোড়ে আবারও হামলার চেষ্টা হয়। এ সময় অন্তত তিন রাউন্ড ফাঁকা গুলির শব্দ পাওয়া যায় বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানিয়েছেন।
প্রতক্ষদর্শীদের অভিযোগ, ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে করতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে বাগেরহাট-৪ আসনের এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি ভালো আছি। অনুষ্ঠান শেষ করে ফিরেছি।’
অনুষ্ঠানস্থলে বা মঞ্চে কোন হামলা বা মারামারির ঘটনা ঘটেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ অনুষ্ঠান শুরুর আগে মাঠের বাইরে মারামারি করেছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে।
বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মো. মনির হোসেন হমলার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘জেলা আওয়ামীলীগ সভাপতির উপস্থিতিতে যে ঘটনা ঘটেছে তা নিন্দনীয়। এ বিষয়ে আমরা সাংগঠনিকভাবে জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদকসহ সংশ্লিষ্টদের অবহিত করেছি। জেলা আওয়ামীলীগের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা পরবর্তি পদক্ষেপ নেবো।
এবিষয়ে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় বলেন, মঞ্চে কোন মারামারি বা গুলি হবার সংবাদ তিনি জানেন না। খেলার মাঠের বাইরে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ মারামারি করেছিলো। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। তবে পুলিশ কোন গুলি ছোড়েনি।
এদিকে ঘটনার পরে মোরেলগঞ্জ পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুরিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তবে বিশৃঙ্খলা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় বারইখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় দল কচুবুনিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় দলকে পরাজিত করে।
এসআইএইচ/বিআই/০১ আগস্ট, ২০১৬