বাগেরহাটের চিতলমারী বিগত বছরগুলোতে বোরো ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমনে ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় চলতি মৌসুমে স্থানীয় কৃষি অধিদপ্তর পোকা রোধে আগাম প্রস্তুতি হাতে নিয়েছেন। গত ১৫ দিন ধরে কৃষি কর্মকর্তাসহ কৃষিবিদরা রাত-দিন পরীক্ষা চালিয়ে কিছু জমিতে পোকার উপস্থিতি পেয়ে এ প্রস্তুতি নিয়েছেন।
তারা উপজেলার প্রত্যন্ত পল্লীর বিভিন্ন ব্লকে হাতে কলমে কৃষকদের নানামুখি প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিচ্ছেন। সেই সাথে তারা জানিয়েছেন সুষম মাত্রায় ইউরিয়া সার প্রয়োগ ও লোগো ভিত্তিক চাষাবাদের কারণে দু’একটা কারেন্ট পোকা দেখা দিলেও তা এ বছর ফসলের ক্ষতি করতে পারবে না।
উপজেলা সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার ১০ টি ব্লকে ১০ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। এরমধ্যে উপশি ১ হাজার ৯৬৫, স্থানীয় জাতের ৩৫ ও হাইব্রীড জাতের ৮ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। প্রতিটি মাঠেই ধানের আবাদ ভাল হয়েছে। ধার-দেনা আর ঋণের জালে জড়িয়ে কৃষকের আপ্রাণ চেষ্টা এখন মাঠভরা সবুজ-সোনালীর সমারোহ। তারা আশায় বুক বেঁধেছে সোনালী ধানে এবার ঘুচবে তাদের ধারদেনা আর পাওনাদারদের তাড়া। ঘুচবে দুঃখ-কষ্ট ও যন্ত্রনা। এমন স্বপ্ন এ অঞ্চলের প্রতিটি কৃষক পরিবারের।
তাদের এমন স্বপ্নকে প্রতি বছর মলিন করে দেয় কারেন্ট পোকা। তাই এ বছর কারেন্ট পোকা রোধে চাষাবাদের শুরু থেকেই স্থানীয় কৃষি অফিস কৃষদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদানসহ সজাগ দৃষ্টিতে রয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু তালহা জানান, গত ১৫ দিন ধরে হিজলা, বড়বাড়িয়া, চিতলমারী সদর, শিবপুর ও সন্তোষপুর ইউনিয়নের ১০ স্থানে আলোর ফাঁদ দিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে শিবপুরের ৩ টি এবং সন্তোষপুরের ১ টি মোট ৪ টি স্থানে কারেন্ট পোকার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। তাই কারেন্ট পোকা দমনে ব্যাপক প্রস্তুতি হাতে নেয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ইতমধ্যে কীটনাশক বিক্রেতাদের চিঠি প্রদান, কৃষকদের নিয়ে অভিহিত করণ সভা, মসজিদ, মন্দির এবং বিভিন্ন হাট-বাজারে কারেন্ট পোকার আক্রমনে রোধে আগাম করণীয় ও বিভিন্ন পরামর্শ মূলক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
চিতলমারী অঞ্চলের কারেন্ট পোকার উপর পিএইচডি (অধ্যয়নরত) কৃষিবিদ এস এম ফেরদৌস আসাবাদ ব্যাক্তকরে জানান, সুষম মাত্রায় ইউরিয়া সার প্রয়োগ ও লোগো ভিত্তিক চাষাবাদের কারণে দু’একটা কারেন্ট পোকা দেখা দিলেও তা এ বছর ফসলের তেমন ক্ষতি করতে পারবে না।