স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাগেরহাট ইনফো ডটকম
কোচিং বিরোধী অভিযান টের পেয়ে বাগেরহাটে কোচিং সেন্টারে তালা ঝুলিয়ে পালালেন বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।
বুধবার (১৫ জুন) সকালে সকালে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর আকষ্মিকভাবে বাগেরহাটের বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে অভিযান চালালে এই চিত্র দেখতে পান অভিযানের কর্মকর্তারা।
শহরের দশানী, সম্মিলন স্কুলের মোড়, পুরাতন পুলিশ লাইন, বালিকা বিদ্যালয় সড়ক, আমলাপাড়া এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় কোচিং সেন্টার গড়ে তুলেছেন শিক্ষকরা।
অভিযোগ রয়েছে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে আসছেন। শিক্ষকদের গড়ে তোলা এসব কোচিং সেন্টারে ছেলে মেয়েদের না পড়ালে কাসে ফেল করিয়ে দেওয়ার অভিযোগ অভিভাবকদের।
বাগেরহাটের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়, বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও যদুনাথ স্কুল এন্ড কলেজের কয়েকজন শিক্ষক শহরের বিভিন্ন এলাকায় কোচিং সেন্টার গড়ে তুলে শিক্ষা বানিজ্য চালিয়ে আসছেন। এসব কোচিং পরিচালকরা শিক্ষার্থী প্রতি প্রত্যেক মাসে এক থেকে দেড় হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়।
বাগেরহাট জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অরুণ কুমার গোস্বামী, সেলিম, মহসিন আলী, কবীর হোসেন আকন, মোহম্মদ আলী, উত্তম কুমার দাস, দেবাশীষ দাস, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের আঞ্জুমান আরা, জুয়েল এবং যদুনাথ স্কুল এন্ড কলেজের আলা উদ্দিনের বিরুদ্ধে কোচিং বাণিজ্য চালানোর অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিভাবকরা বলেন, শহরের দুটি সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাশাপাশি প্রতিটি স্কুলের শিক্ষকরা কোচিং বানিজ্য জড়িয়ে পড়েছেন। স্কুলগুলোতে তারা ঠিক মতো কাস নেন না। ফলে আমরা বাধ্য হয়ে ছেলে মেয়েদের কোচিং এ পড়াচ্ছি। কোচিং বিরোধী এই অভিযানকে স্বাগত জানিয়ে অভিভাবকরা তা অব্যাহত রাখার দাবী জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাগেরহাট সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির এক ছাত্রী বলেন, আমরা বাধ্য হয়ে কোচিং সেন্টারে পড়ি। স্যারেরা কাসে ঠিক মতো পড়ালে আর কোচিং সেন্টারে পড়ার প্রয়োজন হয়না। কোচিং সেন্টার বন্ধের দাবী জানান ওই শিক্ষার্থী।
অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া মাধ্যমিক ও উচ্চ শিা অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক টি এম জাকির হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, শিক্ষা বানিজ্য বন্ধের জন্য আমরা কোচিং সেন্টারগুলোতে অভিযান শুরু করেছি। অভিযান টের পেয়ে কয়েকজন শিক্ষক তাদের কোচিং সেন্টার রেখে পালিয়ে যান। আমরা পর্যায়ক্রমে উপজেলাগুলোতেও কোচিং বানিজ্য বিরোধী অভিযান চালাবো।
মানসম্মত শিক্ষার নিশ্চিতের জন্য বর্তমান সরকার শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়িয়েছে। শিক্ষকদের বেতন দ্বিগুন করা হয়েছে। এর পরও যারা অবৈধ কোচিং বানিজ্যের সাথে জড়াচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর খুলনার সহকারী পরিচালক হেদায়েত হোসেন, বাগেরহাট শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিচালক ফয়সাল হাবিব, বাগেরহাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আকরাম হোসেন, যদুনাথ স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ অজয় চক্রবর্ত্তী এসময় তার সাথে ছিলেন।
এসএইচ/এসআই/বিআই/১৫ জুন, ২০১৬