ফটো করেসপন্ডেন্ট । বাগেরহাট ইনফো ডটকম
অবশেষে আত্মসমর্পণ করলো সুন্দরবনের কুখ্যাত বনদস্যু মাস্টার বাহিনীর প্রধানসহ দশ দস্যু। মঙ্গলবার (৩১ মে) দুপুরে বাগেরহাটের মংলা বন্দরের বিএফডিসি (ফুয়েল) জেটিতে আত্মসমর্পণের এই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে স্বাভাবিক জীবণে ফিরতে সরকারের সহায়তা চান দীর্ঘ দিন ধরে সুন্দরবন ও সংলগ্ন উপকূলের ত্রাস এই দস্যু বাহিনীর দস্যরা।
অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করা দস্যুরা ৫২টি বিদেশি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ও প্রায় ৫ হাজার রাউন্ড বিভিন্ন ধরণের গুলি জমা দিয়েছেন।
জমা দেওয়া ৫২টি অস্ত্রের মধ্যে ১৮টি একনলা বন্দুক, ৬টি দো-নলা বন্দুক, ৬টি পয়েন্ট টু টু বোর, ১টি থ্রি-নট থ্রি রাইফেল, ৩টি ওয়ান শ্যুটারগান, ৫টি রাইফেল বডি পার্টস, ২টি সিঙ্গেল ফ্লোয়ার, ৫টি শটগান, ২টি এয়ারগান ও ৪টি সাটারগান।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, দস্যুবৃত্তি যে ভুল তা বুঝতে পেরেছে মাস্টার বাহিনী। তারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চেয়ে আত্নসমর্পণ করেছে।
সুন্দরবনে অন্য যে বাহিনীগুলো এখনও দস্যুতা করছে তারাও তাদের আত্মশুদ্ধি করে মাস্টার বাহিনীর মতো আত্মসমর্পণ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সরকার তাদের সব ধরনের আইনি সহায়তা দেবে।
অনুষ্ঠানে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (গোয়েন্দা) কর্নেল আনোয়ার হোসেন, র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফরিদুল আলম, উপ- অধিনায়ক মেজর আদনান কবির, র্যাব-৬ এর অধিনায়ক রফিকুল ইসলাম, পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মনিরুজ্জামান, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলম, পুলিশ সুপার (এসপি) মো. নিজামুল হক মোল্লা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সুন্দরবনের অন্যান্য দস্যু বাহিনীও অস্ত্র ত্যাগ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে উদ্বুদ্ধ হবেন বলে আশাবাদ জানিয়ে লে. কর্নেল ফরিদুল আলম বলেন, আত্মসমর্পণ করা দস্যুদের পুলিশে সোপর্দ করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে অর্ধশতাধিক মামলা রয়েছে।
এদিকে সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ দস্যু ‘মাস্টার বাহিনী’র ১০ সদস্যরা আত্মসমর্পণ করায় খুশি উপকূলের জেলা, বাওয়ালী, ট্রলারর মালিক, মাহাজনরা। এই প্রক্রিয়াকে সাধুবাদ জানিয়ে অন্যান্য দস্যুদের আত্মসমর্পণ করাতে; ধারাবাহিক অভিযানের মাধ্যামে বাকী দস্যু বাহিনীগুলোকে নিশ্চিহ্ন করাতে র্যাবের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। তবে যারা তাদের হাতে এমন অস্ত্র তুলে দিয়েছে, অন্তকারের পথে ঠেলে দিয়েছেন তাদেরকেও আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যথায় অন্যান্য দস্যু বাহিনীগুলে আবারও বেপরোয়া হয়ে যেতে পারে। তাই স্বস্তির পাশাপাশি দস্যু নিয়ে সঙ্কার কথাও মনে করিয়ে দেন জেলেরা।