স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট । বাগেরহাট ইনফো ডটকম
সুন্দরবনের দুর্ধর্ষ দস্যুদল ‘মাস্টার বাহিনী’র প্রধানসহ তার বেশ কয়েকজন সহযোগী মঙ্গলবার (৩১ মে) স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অস্ত্রশস্ত্র তুলে দিয়ে আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ করছেন।
মঙ্গলবার দুপুর ৩টায় বাগেরহাটের মংলায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের উপস্থিতিতে এই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান হবার কথা রয়েছে।
অনুষ্ঠানে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদও উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ফরিদুল আলম বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর ৩টায় মংলায় আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানটা (Surrender Ceremony) হবে।’
এর আগে বৈরী আবহাওয়ার কারণে রোববারের (২৯ মে) পূর্বনির্ধারিত আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। ওই দিন ভোরে আত্মসমর্পণের লক্ষে সুন্দরবনের গহীনে চরাপুটিয়ার ভারানী খালে এসে পুলিশের বিশেষ বাহিনীর র্যাব -৮ (বরিশাল) কাছে বিপুল অস্ত্রশস্ত্র জমাও দেয় মাস্টার বাহিনীর সদস্যরা।
রোববার সকাল পর্যন্ত আত্মসমর্পণের ইচ্ছা জানিয়ে মাস্টার বাহিনীর ৭ সদস্য র্যাবর কাছে ৫১টি অত্যাধুনিক দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র ও প্রায় ৫ হাজার গুলি জমা দেয়। বর্তমানে তারা র্যাব-৮ এর হেফাজতে রয়েছেন।
লে. কর্নেল ফরিদুল আলম বলেন, ‘অস্ত্র জমা দেওয়া ৭ জনকে নিয়ে সুন্দরবনে আমাদের অভিযান চলছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এই প্রক্রিয়ায় আরও দস্যুদের অন্তর্ভুক্ত করতে।’
সূত্র বলছে, সোমবার পর্যন্ত মাস্টার বাহিনী ৯ জন সদস্য আত্মসমর্পণের জন্য র্যাবর কাছে ধরা দিয়েছেন।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলম বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল হেলিকপ্টারে করে মংলায় আসবেন বলে র্যাব-৬ (খুলনা) থেকে আমাকে জানানো হয়েছে।
‘মংলায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অন্য কোন প্রোগ্রামে কথা জানা নেই। থাকলে না আমরা জানতাম। অনানুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে অংশ নিতেই তিনি মংলায় আসছেন বলে শুনেছি।’
রোববার র্যাবের কাছে অস্ত্র-গুলি জমা দেওয়া মাস্টার বাহিনীর ৭ সদস্য হলেন, বাহিনীর প্রধান মোস্তফা শেখ ওরফে মজিদ ওরফে কাদের মাস্টার (৪৭), সেকেন্ড ইন কমান্ড সোহাগ আকন (৩৭), ফজলু শেখ (৩৫), সোলায়মান শেখ (২৮), মো. শাহিন শেখ (২৮), সুমন সরকার (৩৪) ও মো. সুলতান খান (৫৮)। পরে ওই বাহিনীর আরও দুই সদস্য র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন বলে জানা গেছে।
তাদের সবার বাড়ি বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার বিভিন্ন এলাকায়। দস্যুতা ছেড়ে তারা সবাই স্বাভাবিক জীবনে ফেরার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
র্যাব কর্মকর্তারা বলছেন, মাস্টার বাহিনীর দেখাদেখি অন্যান্য বাহিনীর সদস্যরাও স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য আত্মসমর্পণের পথই বেছে নিবেন।
এসএইচ/এসআই/বিআই/৩০ মে, ২০১৬