র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কাছে বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ায় যাওয়া ‘মাস্টার বাহিনী’র দস্যুদের আত্মসমর্পণ আনুষ্ঠান স্থগিত হয়েছে।
রোববার (২৯ মে) বেলা পৌনে ১২টার দিকে র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ফরিদুল আলম আত্মসমর্পণ স্থগিতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সুন্দরবনের অভ্যান্তরে হাড়বাড়িয়ার চরাপুটিয়া এলাকায় র্যাবের কাছে এ দস্যু বাহিনীর সাত সদস্য অাত্মসমর্পণের উদ্যেশে অস্ত্রসস্ত্র জমা দেয়।
আত্মসমর্পণে যাওযা দস্যুরা হলেন, সোহাগ আকন (৩৭), ফজলু শেখ (৩৫), সোলাইমান শেখ (২৮), মো. শাহিন শেখ (২৮), সুমন সরকার (৩৪), মো. সুলতান খান (৫৮) ও মাস্টার বাহিনীর প্রধান মোস্তফা শেখ ওরফে মজিদ ওরফে কাদের মাস্টারের (৪৯) নাম জানা গেছে।
তাদের বাড়ি বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও খুলনার বিভিন্ন এলাকায় বলে জানা গেছে।
ফরিদুল আলম বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারনে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে আসতে পারছেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। দস্যুরাও তার কাছে ছাড়া আত্মসমর্পণ করতে রাজি হচ্ছেন না। এজন্য আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে খুলনা র্যাব-৬ জানায়, রোববার মংলায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে অস্ত্র জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করবেন মাস্টার বাহিনীর দস্যুরা।
সূত্র বলছে, আত্মসমর্পণে যাওয়া দস্যুরা সকাল ১১টা পর্যন্ত দেশি-বিদেশি ৫১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও পাঁচ হাজার গুলি জমা দিয়েছেন।
র্যাবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের পশ্চিম উপকূল এবং সুন্দরবনের জেলে, বাওয়ালী, মৌয়ালদের ত্রাস ছিল দস্যু মাস্টার বাহিনী। নৌকা ও জালের হিসাব করে নির্ধারিত হারে দস্যুদের চাঁদা দিতে হতো জেলে ও বনজীবীদের। এতোদিন অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়সহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিল এ বাহিনীর সদস্যরা। দস্যুদের বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল, মংলা, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকায়।
আত্মসমর্পণের পর দস্যুদের আইনের কাছে সোপর্দ করতে স্থানীয় পুলিশও বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছিলো।
গত প্রায় ৫ বছর ধরে সুন্দরবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে প্রায় একশ জলদস্যু ও বনদস্যু নিহত হয়। সুন্দরবনে দস্যু দমনে বিশেষ করে র্যাবের অভিযানের পর থেকে কোন ঠাসা হতে শুরু করে দস্যু বাহিনীগুলো।
গেল প্রায় তিন-চার দিন ধরে সুন্দরবনের অন্যতম বড় এই দস্যু বাহিনীর আত্মসমর্পণ গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। নাটোকীতার মাঝে সকালে তারা র্যাবের কাছে অস্ত্র জমা দেয়। দুপুরে মংলা ফুয়েল জেটিতে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করার হয়। মন্ত্রী আসতে না পারায় আত্মসমর্পণ স্থগিত করা হয়েছে।