বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একই স্কুলের এক সহকারী শিক্ষিকার শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি জানাজানি হলে সোমবার (১৬ মে) দুপুরে স্থানীয় জনতা স্কুলে গিয়ে ইসমাইল হোসেন (৫৫) নামে ঐ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে জুতা মিছিল করে ঘেরাও করে।
এ সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরুদ্ধ ঐ প্রধান শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
ইসমাইল হোসেন মোরেলগঞ্জ উপজেলার বারইখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলে সোমবার সন্ধ্যায় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ থানা থেকে ওই প্রধান শিক্ষককে ছাড়িয়ে নিয়ে গেলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুল আলম বলেন, অনেক অনুরোধ করার পরেও ঘটনার শিকার ঐ শিক্ষিকা থানায় মামলা করতে রাজি হননি। এ অবস্থায় সন্ধ্যায় শিক্ষা কর্মকর্তা ঐ শিক্ষককে নিজ জিম্মায় নিতে আগ্রহী হওয়ায় তাকে ঐ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।
পুুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, রোববার (১৫ মে) দুপুরে ছুটির পর ঐ শিক্ষিকা বিদ্যালয়ে কাজ করছিলেন। এ সময় প্রধান শিক্ষক মো. ইসমাইল হোসেন ঐ শিক্ষিকাকে কু-প্রস্তাব দেন। এক পর্যায় তিনি শিক্ষিকার শরীরে হাত দিলে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।
সন্ধ্যায় বিষয়টি ঐ শিক্ষিকা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে জানান। ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে সোমবার স্থানীয় গ্রামবাসী ও অভিভাবকরা বিদ্যলয়ের সামনে প্রধান শিক্ষকের বিচারের দাবিতে জুতা মিছিল করেন। এক পর্যায়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে দুপুরে পুলিশ এসে প্রধান শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
অভিযুক্ত ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান বলেন, শিক্ষিকার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
স্থানীয় কয়েকজন গ্রামবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ঐ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগেও এ ধরণের একাধিক যৌন হয়রাণীর অভিযোগ রয়েছে। এ ধরণের একাধিক ঘটনায় তদন্ত করা হলেও তার বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘এ ধরণের কিছু কথা আমার কানেও এসেছে। তবে আমি বিস্তারিত কিছু জানি না।’
তিনি মনে করেন যে, রোববারের এই ঘটনাটিও তদন্তের দাবি রাখে। কারণ দপ্তরী নিয়োগকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ে বিরোধ চলছে। ঐ প্রধান শিক্ষক প্রকৃত অপরাধী না কী ঘটনার শিকার, তা খুঁজে দেখা দরকার।