সরকার সুন্দরবনকে গুরুত্বহীনভাবে দেখে। তাদের নির্লিপ্ততার কারণে বারবার সুন্দরবনে আগুন লাগছে বলে মন্তব্য করেছেন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বন্দর-বিদ্যুৎ রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ।
শুক্রবার (১৩ মে) বিকালে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে জাতীয় কমিটির আঞ্চলিক প্রতিনিধি সভায় তিনি এ কথা বলেন।
এক মাসে চার বার আগুন লাগার বিষয়ে অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, সুন্দরবনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় সরকার দলের লোকেরাই জড়িত। উপরের ইন্ধন ছাড়া কোন ভাবেই এই কাজ সম্ভব নয়। সুন্দরবনকে গুরুত্বহীনভাবে দেখার কারনেই দুর্বৃত্তরা বন ধ্বংস করতে উৎসাহী হচ্ছে।
সুন্দরবন বিধ্বংসী সব প্রকল্প বাতিলের দাবিতে বন সংলগ ৬ জেলার নেতাদের নিয়ে সভায় তিনি বলেন, মূনাফা লোভীদের তৎপরতা বন্ধ না হলে সুন্দরবন রক্ষা করা যাবে না। রামপালসহ সুন্দরবন বিধ্বংসী প্রকল্প নিয়ে সরকার নৌতিক ভাবে পরাজিত। নিজেদের অবস্থান গত দুর্বলতার করনে জাতিসংঘের ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদের সাথে সরকার তাদের দেখা করতে দেয়নি।
বিদ্যুতকেন্দ্র হলে এই অঞ্চলের চার কোটি মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্থ হবে। দেশব্যাপী জাতীয় কমিটির জনসমর্থন রয়েছে। সুন্দরবন রক্ষায় বড় বড় প্রকল্প গ্রহণের দরকার নেই।
‘বনজীবিরা সুন্দরবন ধ্বংস করে না। বড় বড় কর্পোরেট ও বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো নানা পরিকল্পনা-প্রকল্প ভাবনা সুন্দরবনকে ধ্বংসের দিকে নিচ্ছে। বন সংলগ্ন সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততাই বনকে রক্ষা করবে।’
রামপালে কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র হওয়ার কারনে যেসব জেলা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তাদেরকে সংগঠিত করতে জনসংযোগ করা হবে। সরকারকে তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি আগামী ১৫ মে পর্যন্ত সুন্দরবনের কাছে বাগেরহাটের রামপালে কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান থেকে সরে আসতে সময় বেধে দিয়েছে। কিন্তু সরকার তা না করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ১৭ মে ঢাকায় জাতীয় কমিটি নতুন কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে।
বন সংলগ্ন বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষিরা, যশোর, বরিশাল ও পিরোজপুর জেলার প্রতিনিধিদের নিয়ে সভায় রামপালসহ সুন্দরবন বিধ্বংসী প্রকল্প বাতিলে হরতাল, অবরোধ, ঢাকা অভিমুখি লংমার্চের মতো কর্মসূচির ঘোষণার আভাস দেন তিনি।
সভা থেকে আঞ্চলিক, জাতীয় এমন কি আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারী দেন নেতারা।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন তেল গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সরদার রুহিন হোসেন প্রিন্স, ফিরোজ আহমেদ, কল্লোল মোস্তফা, বাগেরহাট জেলা শাখার আহ্বায়ক রণজিৎ চট্টোপাধ্যায়, সদস্য সচিব ফররুখ হাসান জুয়েল প্রমূখ।
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার কৈর্গদাসকাঠি-সাপমারী মৌজায় এক হাজার ৭৩৬ একর জমির ওপর ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ নির্মান করছে যৌথভাবে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও ভারতের ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কোম্পানি।