ঢাকার ইডেন কলেজের ছাত্রী শরীফা সুলতানা পুতুলকে হত্যার দায়ে তার স্বামীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে বাগেরহাটের একটি আদালত।
হত্যার তিন বছর বৃহস্পতিবার (১২ মে) বেলা সোয়া ১১টার দিকে বাগেরহাটের দায়রা জজ আদালতের বিচার মো. মিজানুর রহমান খান এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডিত শিকদার মাহমুদুল আলম (৩৫) বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের উদয়পুর দৈবকান্দি গ্রামের প্রয়াত শিকদার সামছুল আলমের ছেলে। আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের তিনদিনের মাথায় স্ত্রী পুতুলকে (২২) গলা কেটে হত্যা করে মাহমুদুল।
নিহত শরীফা সুলতানা পুতুল দৈবকান্দি গ্রামের মো. আবু দাউদের মেয়ে এবং ঢাকা ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ইতিহাস বিভাগের সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি শেখ মোহম্মদ আলী মামলার বরাত দিয়ে বলেন, শরীফার বড় বোন সাগরিকা হলেন মাহমুদুলের বড় ভাই শাইকুলের স্ত্রী। আত্মীয়তার সূত্রে ইডেন কলেজের ছাত্রী শরীফা আক্তারের সঙ্গে মাহমুদুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে পরিবারের সদস্যদের না জানিয়ে তারা গোপনে বিয়ে করেন।
“ছয় মাস পর ঘটনা জানাজানি হলে উভয় পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে নিয়ে ২০১৩ সালের ১০ মে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে দেন। বিয়ের ৩দিন পর ১৩ মে গভীর রাতে পুতুলের মোবাইল ফোনে একটি এসএমএস দেখলে স্ত্রীর পরকীয়া রয়েছে বলে ধারণা করেন মাহামুদ।”
এনিয়ে দুজনের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে পুতুলকে ধারলো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে তার স্বামী।
বাদী পক্ষের আইনজীবি এ্যাড. একে আজাদ ফিরোজ টিপু বলেন, হত্যার পর মাহমুদুল রাতেই মোল্লাহাট থানায় গিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন এবং কীটনাশক পান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে তালাবদ্ধ ঘরের ভেতর থেকে পুতুলের মৃতদেহ ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাপাতি উদ্ধার করে।
** বিয়ের ৩ দিন পর স্ত্রী খুন, স্বামীর আত্মসমর্প
ঘটনার পরদিন ১৪ মে নিহত পুতুলের বাবা মো. আবু দাউদ বাদী হয়ে মোল্লাহাট থানায় মাহমুদুল আলমের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোল্লাহাট থানার ওসি আবু সাইদ মোহাম্মদ খায়রুল আনাম ওই বছরের ১০ নভেম্বর মাহমুদুল আলমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। আদালত ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এই রায় ঘোষণা করে।
নিহতের বাবা আবু দাউদ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে মাহমুদুল আলমকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে তার মৃতুদণ্ড কার্যকর করতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
আসমী পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন এ্যাড. ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ।