জেলে, বাওয়ালী বা মৌয়ালদের অসাবধানতায় ফেলা আগুনে নয়- দুর্বৃত্তদের দেওয়া পরিকল্পিত আগুনেই সুন্দরবন পুড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বন সংরক্ষক (সিসিএফ) মো. ইউনুছ আলী।
শনিবার (৩০ এপ্রিল) বিকালে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের ২৫ নম্বর কম্পার্টমেন্টের তুলাতলা এলাকা পরিদর্শনে এসে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) বন ও পরিবেশ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছিলেন, ‘সুন্দরবনে মধু আহরণ করতে গিয়ে কৌশল হিসেবে আগুন জ্বালানো হয়। শুষ্ক মৌসুমে বনের ঝরা পাতাগুলো আরও বেশি শুষ্ক থাকে। এ কারণে এই সুন্দরবনে বারবার আগুন লাগছে।’
তবে মো. ইউনুছ আলী বলেন, ‘সুন্দরবনে লাগা আগুন জেলে, বাওয়ালী বা মৌয়ালদের দেওয়া নয়। এবারের আগুনের ধরন ভিন্ন। নাশকতার জন্য দুর্বৃত্তরা পরিকল্পিতভাবে বনে আগুন দিয়েছে। বনের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় ঘুরে ঘুরে অন্তত ২০টি স্থানে আগুন দিয়েছে।’
যারা এ নাশকতা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুন্দরবনে বনজীবীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা (পাশ-পারমিট) সাময়িক উল্লেখ করে তিনি বলেন, বনের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
আগুনে সুন্দরবনের তেমন কোনো মূল্যবান গাছ পোড়েনি দাবি করে প্রধান বন কর্মকর্তা ইউনুছ আলী বলেন, যা পুড়েছে তার মধ্যে লতাগুল্ম জাতীয় গাছ এবং ২০০৭ সালের সিডরে উপড়ে পড়া শুকনা গাছ রয়েছে।
এ সময় বন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. জহির উদ্দিন আহমেদ, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলামসহ বন বিভাগের কর্মকর্তারা তার সাথে ছিলেন।
এরআগে ৩ দফায় একই এলাকায় আগুন লাগার জন্য স্থানীয় দুর্বৃত্তদের দায়ী করে আসছে বন বিভাগ। আগুনের জন্য বন বিভাগ স্থানীয় ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে পৃথক ৩টি মামলা করেছে।
গত ২৭ এপ্রিল বিকেল ৪টার দিকে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের ২৫ নম্বর কম্পার্টমেন্টের তুলাতলা এলাকায় আগুন লাগে। আগুনে বনের সাড়ে ৩ একর ভূমি পুড়ে যায়।
এর আগে গত ২৭ মার্চ, ১৩ ও ১৮ এপ্রিল আগুনে বনের নাংলী ক্যাম্প এলাকার প্রায় ১০ একর বনাঞ্চল পুড়ে যায়।