বাগেরহাটের মংলায় ১৩ বছর আগে যুবদল নেতা আব্দুল হালিম তালুকদার হত্যার ঘটনায় করা মামলায় একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে বাগেরহাটের দায়রা জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রমহান খান এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মো. নূরুজ্জামান বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামের আব্দুল জলিল মাস্টারের ছেলে। মামলা চলাকালে জামিনে মুক্তির পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।
রায়ে নূরুজ্জামানকে আদালত ২০ হাজার টাকা জরিমানাও করে। জরিমানার ওই অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হলে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর মংলা শহরের রিমঝিম সিনেমা হলের পেছনে মংলা পৌর যুবদলের সভাপতি ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর আব্দুল হালিম তালুকদারসহ কয়েকজন ব্যাডমিন্টন খেলছিলেন। এ সময় দুটি রিকশা করে চারজন সেখানে গিয়ে যৌথ বাহিনীর পরিচয় দিয়ে হালিমকে ডাক দেন।
“হালিম তাদের দিকে এগিয়ে গেলে নূরুজ্জাযমান তাকে গুলি করে হত্যা করে। পরে স্থানীয়রা নূরুজ্জামানকে ধাওয়া করে অস্ত্র ও গুলিসহ আটক করে যৌথ বাহিনীর কাছে সোপর্দ করে।”
ঘটনার পরদিন নিহতের ভাই মোজাম্মেল হোসেন তালুকদার বাদী হয়ে নূরুজ্জামানসহ ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে মংলা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলার বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, মামলার প্রথম দফা তদন্ত শেষে মংলা থানা পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দিলে আদালত মামলাটির অধিকতর তদন্তের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করে।
বাগেরহাট জেলা সিআইডি পুলিশের তৎকালীন পরিদর্শক মো. রফিকুল ইসলাম জোয়াদ্দার ২০০৮ সালের ১৮ মে তদন্ত শেষে ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলা চলাকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের আইন শাখা -১ এর {সারক নং – স্বম (আইন ১) প্রত্যাহার ১২/১০ (২৩ তম সভা)/৬২০৩} এক সভার সিদ্ধান্তে ২০১১ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি আসামিদের মামলা থেকে অব্যাহতি দিতে আদালতের কাছে আবেদন করেন। আদালত ওই আবেদনটি আমলে নিয়ে ১৬৪ ধারায় দোষী স্বীকারোক্তি দেওয়া আসামি নূরুজ্জামান ছাড়া অন্যদের অব্যাহতির বিষয়টি বিবেচনায় নেয় এবং বিচার কাজ শুরু করেন।
মামলার ১০ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেয়।