মাত্র চার দিনের ব্যাবধানে সুন্দরবনের নাংলি এলাকায় ফের আগুন ধরেছে। বন বিভাগের ধারনা, এবার আগুন লাগানো হয়েছে।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধান সাগর স্টেশনের নাংলি ফরেষ্ট ক্যাম্প এলাকায় এক মাসের মধ্যে তৃতীয় দফা আগুন লাগার এ ঘটনা ঘটে।
আগুন লাগার প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা পর দুপুর ২টার দিকে স্থানীয়দের নিয়ে বন বিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।
বন বিভাগের খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. জহির উদ্দিন আহম্মেদ বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে আগুন নিভে যাওয়ার খবর নিশ্চিত করে বলেন, বাববার আগুন লাগায় বনের ধানসাগর স্টেশন এলাকাটি ‘ঝুকিপূর্ণ’ বলে মনে করছে বন বিভাগ। এ ধরনের ঘটনা রোধে বন বিভাগ ওই এলাকা সার্বক্ষনিক টহলের জন্য ৫টি ‘ফায়ার ওয়াচার’ টিম গঠন করেছে।
সিএফ’সহ সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বন কর্মকর্তারা বনে করছেন, এবার বনের এই এলাকাায় আগুন লাগানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ মার্চ এবং ১৩ এপ্রিল সুন্দরবনের একই এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে নাংলি, আব্দুলা’র ছিলা, পঁচাকুড়ালিয়া ও নাপিতখালী এলাকার প্রায় ১০ একর বনভুমি পুড়ে যায়।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম আগুনের ঘটনাটি ‘নাশকতা’ উল্লেখ করে বলেন, মাত্র এক মাসের মধ্যে বনের নাংলি এলাকায় তিন দফা আগুনের ঘটনা স্বাভাবিক নয়। ১৩ এপ্রিল আগুন লাগার ঘটনাটি লাগার ঘটনা ‘ইচ্ছাকৃত’ ও ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে প্রমাণ পায় বন বিভাগ।
আসন্ন বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরার সুবিধার্থে বনের ওই নিচু এলাকা উপযোগী করে তুলতে আগুন লাগানো হয়েছিল, এমন অভিযোগে মামলা দায়েরের পর রোববার আদালত ৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এর প্রেক্ষিতে ‘নাশকতার’ উদ্দেশ্যে ‘পরিকল্পিতভাবে’ বন সংলগ্ন এলাকায় দুর্বৃত্তরা আজ আগুন ধরিয়ে দেয় বলে জানান তিনি।
এদিকে, এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বন বিভাগ।
সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) বেলায়েত হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ এবং চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা গাজী মতিয়ার রহমান। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে আগুন দেওয়া ঘটনায় জড়িতদের ‘চিহ্নিত’ করে বিস্তারিত প্রতিবেদ দিতে বলা হয়েছে।
সিএফ জহির উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, তিন সদস্যের এক একটি ‘ফায়ার ওয়াচার টিম’ পাহারা দেবে যাতে বাইরের লোক বনে ঢুকেতে না পারে।
আগুন লাগানোর ঘটনাায় বন বিভাগের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে বলে জানান তিনি।
বন বিভাগের ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) সুলতান মাহমুদ টিটু বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, আগুন নেভাতে বাগেরহাট ও মোরেলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট যোগ দেয়। এর আগে দুই শতাধিক স্থানীয়দের আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে বন বিভাগ।