বাগেরহাটে ঝড়ে ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিধ্বস্ত হয়েছে। উপড়ে গেছে বহু গাছপালা। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ধানসহ কৃষি ফসলের।
মঙ্গলবার রাতে বাগেরহাটের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ওই আকষ্মিক কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ পড়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় জেলাজুড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।
বুধবার (৬ এপ্রিল) বিকাল ৪টা পর্যন্ত স্বাভাবিক হয়নি বিদ্যুৎ সরবরাহ।
ঝড়ে প্রাণহানীর কোন খবর পাওয়া না গেলেও নারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
আহতদের মধ্যে সদর উপজেলার উৎকুল গ্রামের মকসুদ হাওলাদারের স্ত্রী আফরোজা বেগমকে (৩৫) খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের বাগেরহাট সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সদর উপজেলার পোলঘাট গ্রামের মো. মুরাদ হোসেন বলেন, রাত সোয়া ৮টার দিকে ঝড় আঘাত হানে। মুষলধারা বৃষ্টিও ছিল।
ঝড়ে তাদের বাড়ির টিনের চাল উড়িয়ে নিয়ে যায় বলে জানান তিনি।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলম বলেন, রাতে বাগেরহাটের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে কাঁচা ও আধাপাকা বসতঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির বিধ্বস্ত হয়েছে। অসংখ্য গাছপালা উপড়ে ও ভেঙে পড়ে।
“এছাড়া খুলনা-বরিশাল, খুলনা-মংলা ও বাগেরহাট-মাওয়া মহাসড়কে বড় বড় গাছ পড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাতের মধ্যে এসব গাছ সরিয়ে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।”
কোনো প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা নিতে বিভিন্ন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কয়েকজন আহত হওয়ার খবরও নিশ্চিত করেন তিনি।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ পাল বলেন, ঝড়ে বিদ্যুতের তারের উপর বড় বড় গাছপালা পড়ে থাকায় রাত থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গাছপালা সরিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে কাজ চলছে।
ইতোমধ্যে জেলা শহরের কয়েকটি জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হয়েছে।
বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ব্যবস্থাপক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, ঝড়ে গাছপালা উপড়ে ও ভেঙে পড়ে পল্লী বিদ্যুতের অধিকাংশ লাইনের তার ছিঁড়ে রাস্তায় পড়ে আছে।
দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করতে তাদের একাধিক দল কাজ করছে বলে জানান তিনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, বাগেরহাট সদর, কচুয়া ও ফকিরহাট উপজেলায় পাকা বোরো ধানের বেশি ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়া জেলার সব এলাকায়ই ধান, কলা, আমসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপনে কৃষি বিভাগ কাজ করছে।