প্রচ্ছদ / খবর / সুন্দরবন ছেড়েছে ইউনেস্কোর দল, প্যারিস ফিরে প্রতিবেদন

সুন্দরবন ছেড়েছে ইউনেস্কোর দল, প্যারিস ফিরে প্রতিবেদন

UNSCO-time-visit-in-sundorbonসুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলবাহী ট্যাংকার, কয়লা ও সারবোঝাই কার্গো জাহাজ ডুবির ঘটনাস্থল, রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং সুন্দরবনের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি স্থান পরিদর্শন শেষ করেছে ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদল।

সুন্দরবনের বর্তমান অবস্থা পরিদর্শনে আসা জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কোর ‘রি-অ্যাকটিভ মনিটরিং মিশন’-এর প্রতিনিধিদলটি প্যারিস ফিরে বাংলাদেশ সরকারকে তাদের প্রতিবেদন দেবে।

সুন্দরবনে তিন দিনের পরিদর্শন শেষে শুক্রবার (২৫ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ঢাকার উদ্দেশ্যে মংলার পশুর হোটেল ত্যাগ করেন।

এরআগে বিকালে বাগেরহাটের মংলায় পৌঁছে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা মংলা সমুদ্র বন্দর পরিদর্শনে যান। সেখানে তারা বন্দর চেয়রম্যান ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন ইউনেস্কোর ‘রি-অ্যাকটিভ মনিটরিং মিশন’-এর প্রতিনিধিরা।

২৩ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত সুন্দরবনে অবস্থানকালে ইউনেস্কোর প্রতিনিধিরা বন ও বন সংলগ্ন এলাকায় মানবনসৃষ্ট দুষণ এবং সুন্দরবনের পরিবেশ বিপর্যয়ের চিত্র পর্যবেক্ষণ করেন।

ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদলে ছিলেন, ফ্রান্সের লাতিন আমেরিকা ও ক্যারাবিয়ন ইউনিটের প্রকল্প কর্মকর্তা ফ্যানি এডোলফিন এম ডোভের, যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) এর প্রকৃতি সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ নওমি ক্লার, ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা (মনিটরিং অফিসার) মিজুকি মুরাই।

শুক্রবার সন্ধ্যায় মংলায় পর্যটন করপোরেশনের হোটেল পশুরে ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদলের সাঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক, মংলা ও রামপালের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) সাইদুল ইসলাম জানান, সুন্দরবনে অবস্থানকালে তারা বনের পরিবেশ ও জীব-বৈচিত্র্য থেকে মুগ্ধ হয়েছেন। তবে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা তারা পর্যবেক্ষণ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে অবস্থিত ইউনেস্কোর সদর দপ্তরে গিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে তাদের পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট পাঠাবে দলটি।

সুন্দরবনে অবস্থানকালে ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, বন বিভাগ, জ্বালানি মন্ত্রণালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ বিভিন্ন দপ্তরের মোট ১৪ জন কর্মকর্তা ছিলেন। তারা ইউনেস্কোর দলটিকে রামপালে ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে ‘ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের (এনটিপিসি) প্রকল্প এলাকা, সুন্দরবনের পশুর ও শ্যালা নদীর দুর্ঘটনাস্থল, মংলা বন্দর এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখান।

আগামী ২৮ মার্চ ঢাকায় ইউনেস্কোর প্রতিনিধিদলের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব শেখ মো. তহিদুল ইসলাম জানান, বৈঠক শেষে তারা প্যারিসে ফিরে সুন্দরবন পরিদর্শন সংক্রান্ত প্রতিবেদন সরকারের কাছে পাঠাবে তারা।

জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা- ইউনেস্কো ১৯৯৭ সালে বিশ্বের বর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনকে ‘বিশ্ব ঐতিহ্য’র তালিকাভুক্ত করে।

২০১৫ সালের মার্চে ইউনেস্কোর বার্ষিক সাধারণ সভায় সুন্দরবনের পাশে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, বনের ভেতর নৌ-চলাচল, আশপাশে শিল্পকারখানা ও শ্যালা নদীতে তেল ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারে উদ্বেগ জানানো হয়। এর প্রেক্ষিতে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য (ওয়াল্ড হ্যারিটেজ সাইড) তালিকায় থাকবে কিনা তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসে।

ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কনভেনশন বাস্তবায়ন বিধিমালা, ২০১৫ অনুযায়ী তারা কাজ করে। ঐতিহ্য রক্ষায় পর্যালোচনা শেষে সংশিষ্ট দেশের সরকারকে পরামর্শ ও সুপারিশও দেয়। সরকার তা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে বিশ্ব ঐতিহ্যের নামের তালিকা থেকে বাদ যায়।

২৩ মার্চ :: সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
এস/আইএইচ/এনআরএ/বিআই

About বাগেরহাট ইনফো নিউজ