সুন্দরবনের শ্যালা নদীর হরিণটানা এলাকায় কয়লাবাহী উপকূলীয় জাহাজ (কোস্টার) ডুবির ঘটনায় সুন্দরবন বন বিভাগের চার সদস্যের তদন্ত কমিটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
বুধবার (২৩ মার্চ) দুপুরে তদন্ত কমিটির প্রধান সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) কামাল উদ্দিন আহমেদ বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) সাইদুল ইসলামের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেন।
ঘটনার পরদিন সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের ডিএফও সাইদুল ইসলাম চার সদস্যের ওই তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
কমিটি তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশে সুন্দরবনের শ্যালা নদী দিয়ে চলাচল করা সব ধরনের বাণিজ্যিক নৌযান স্থায়ীভাবে বন্ধ, ডুবে যাওয়া কয়লাবাহী কোস্টারটি দ্রুত অপসারণ এবং ওই নৌপথে নতুন করে দুর্ঘটনা এড়াতে আগে ডুবে থাকা দু’টি নৌযান এলাকা চিহ্নিত করে দিতে বিআইডাব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডুবে যাওয়া কয়লাবাহী কোস্টারটি দ্রুত অপসারণ না করায় পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জলজ প্রাণীর কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। শ্যালা নদীর যে এলাকায় কোস্টারটি ডুবে রয়েছে সেখানের পানির গভীরতা ৩০ থেকে ৪০ ফুট। বন বিভাগের প্রশিক্ষিত ডুবুরি না থাকায় ওই কোস্টারে থাকা কয়লা পরীক্ষার জন্য তোলা সম্ভব হয়নি।
যার কারণে ওই কোস্টারে থাকা কয়লায় জলজ প্রাণীর কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে তা এখন বলা যাচ্ছে না।
১৯ মার্চ শনিবার বিকেলে সুন্দরবনের শ্যালা নদীর হরিণটানা এলাকায় ১ হাজার ২শ’ ৩৫ টন কয়লা নিয়ে তলাফেটে ডুবে যায় এমভি সি হর্স-১ নামের কোস্টারটি।
এদিকে ঘটনার পর চার দিন পার হলেও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ) কর্তৃপক্ষ ডুবে যাওয়া কোস্টারটি উদ্ধার কাজ শুরু করতে পারেনি। কবে নাগাদ তারা উদ্ধার কাজ শুরু করতে পারবে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেনা।
তবে এ ঘটনায় সুন্দরবনের শ্যালা নদী দিয়ে নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডাব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।
বিআইডাব্লিউটিএ’র খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আশরাফ হোসেন বলেন, কোস্টার ডুবির পর বিআইডব্লিউটিএ’র চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর পরিস্থিতি সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে। তবে তারা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত না দেয়ায় ডুবে যাওয়া কোস্টারটির উদ্ধার কাজ শুরু করা যাচ্ছেনা।
তিনি আরও বলেন, কোস্টারের মালিক পক্ষ ঘটনাস্থল ঘুরে গেছেন। তারা তাদের ওই কোস্টারটি উদ্ধার করতে প্রাইভেট আধুনিক নৌযান ভাড়া করবে বলে আমাদের জানিয়েছে। তবে তারা কবে উদ্ধার কাজ শুরু করবেন তা নিশ্চিত করে কিছু বলেননি।
অন্যদিকে, কয়লাবাহী কোস্টার ডুবির ঘটনায় জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের পৃথক দু’টি কমিটি ঘটনা তদন্তে কাজ করছে।
এর আগে ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে ওটি সাউদার্ন স্টার-৭ নামে একটি ওয়েল ট্যাংকার ডুবে যায়। ওই সময় সুন্দরবনের এ নৌপথটি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশবাদী সংগঠন দাবি জানিয়ে আসছে।