ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোট ছাড়াই চেয়ারম্যান হওয়ার হিড়িক পড়েছে বাগেরহাটে। প্রতীক বরাদ্দের আগেই জেলার ৩৪ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে।
ভোট ছাড়াই বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট ও চিতলমারী উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে সব কটি, বাগেরহাট সদরের ১০টির মধ্যে ৯টি, কচুয়ায় ৭টির মধ্যে ৪টি, মোড়েলগঞ্জের ১৬টির মধ্যে ৩টি, রামপালে ১০টির মধ্যে ২টি, ফকিরহাটে ৮টির মধ্যে ২টিতে ও মংলা উপজেলার ৬টির মধ্যে ১টি ইউনিয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছে।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন বুধবার (২ মার্চ) রাতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন মল্লিক বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেন, ২২ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র জমার শেষ দিনে ১৯টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ছাড়া আর কেউ মনোনয়নপত্র জমা দেননি।
“এছাড়া মনোনয়পত্র যাচাই বাছাই ও প্রত্যাহার শেষে আরও ১৫টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী হওয়ায় মোট ৩৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন।”
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জানান, একক প্রার্থী হওয়া ৩৪ ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরাই চেয়ারম্যান হচ্ছেন, যা বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) সকালে বেসরকারিভাবে ঘোষণা করা হবে।
এদিকে বাগেরহাট জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আইনজীবী শেখ ওয়াহিদুজ্জামান দিপু অভিযোগ করেছেন, “তফশিল ঘোষণার পর থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও তাদের লোকেরা বিএনপির প্রার্থীদের ভয়-ভীতি দেখায় এবং বাধা দেওয়ায় বিএনপির প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারেননি।”
“এছাড়া গত কয়েক দিনে অব্যাহত হুমকি ও চাপের মুখে আরও কয়েকজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন।”
তবে বিএনপি নেতার অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ কামরুজ্জামান টুকু বলেন, “এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।
“বিএনপি সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে সব ইউনিয়নে প্রার্থী দিতে পারেনি। এখন তারা আওয়ামী লীগের উপর তাদের ব্যর্থতার দায় চাপানোর চেষ্টা করছে।”
বাগেরহাটে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন যারা-
বাগেরহাট সদর উপজেলা:
কাড়াপাড়া ইউনিয়ন- শেখ বশিরুল ইসলাম, বেমরতা ইউনিয়ন- মনোয়ার হোসেন টগর, গোটাপাড়া ইউনিয়ন- শেখ সমশের আলী, বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন- শংকর কুমার চক্রবর্তী, বারুইপাড়া ইউনিয়ন- মো. ছরোয়ার হোসেন, যাত্রাপুর ইউনিয়নে- মোল্লা আবদুর মতিন, খানপুর ইউনিয়ন- ফকির ফহম উদ্দিম, রাখারগাছি ইউনিয়ন- শেখ আবু শামীম (আসনু), ডেমা ইউনিয়ন- মো. মনি মল্লিক।
মংলা উপজেলা:
সোনাইতলা ইউনিয়ন- নাজিনা বেগম নারজিনা।
রামপাল উপজেলা:
পেড়িখালী ইউনিয়ন- মো. রফিকুল ইসলাম বাবুল, মল্লিকের বেড় ইউনিয়ন- তালুকদার নাজমুল কবির।
কচুয়া উপজেলা:
গজালিয়া ইউনিয়ন- এসএম নাসির উদ্দিন, ধোপাখালী ইউনিয়ন- মো. মকবুল হোসেন, কচুয়া সদও ইউনিয়ন- শিকদার হাদিউজ্জামান, বাধাল ইউনিয়ন- নকীব ফয়সাল অহিদ।
চিতলমারী উপজেলা:
বড়বাড়ীয়া ইউনিয়ন- মাসুদ সরদার, কলাতলা ইউনিয়ন-শিকদার মতিয়ার, হিজলা ইউনিয়ন-কাজী আজমীর আলী, শিবপুর ইউনিয়ন-অহিদুজ্জামান মোল্লা, চিতলমারী ইউনিয়ন-মো. নিজাম উদ্দিন শেখ, চরবানিয়ারী ইউনিয়ন-অশোক কুমার বড়াল ও সন্তোষপুর ইউনিয়ন বিউটি আক্তার।
ফকিরহাট উপজেলা:
ফকিরহাট সদর ইউনিয়ন- শিরীনা আক্তার, মুলঘর ইউনিয়ন- হিটলার গোলদার।
মোল্লাহাট উপজেলা:
উদয়পুর ইউনিয়ন-এসকে হায়দার মামুন, চুনখোলা ইউনিয়ন-মুন্সী তানজিল হোসেন, কুলিয়া ইউনিয়ন- বাবলু মোল্লা, গাওলা ইউনিয়ন-শেখ রেজাউল কবির, কোদালিয়া ইউনিয়ন-বিএসএমবি জামান সাইফুল ও আটজুড়ি ইউনিয়ন মশিউর রহমান মিয়া।
মোরলগঞ্জ উপজেলা:
তেলগাতি ইউনিয়ন- মোরশেদা আক্তার, পঞ্চকরণ ইউনিয়ন- আ. রাজ্জাক মজুমদার, চিংড়াখালী ইউনিয়ন- মো. আলী আক্কাস।