বাগেরহাটে অন্ত:সত্তা এক গৃহবধুকে মারধরের পর অতিরিক্ত রক্ষক্ষরণে তার গর্ভের সন্তান নষ্ট হয়ে গেছে।
অসহ্য যন্ত্রণা আর রক্তক্ষরণ নিয়ে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তির পর রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) নওশিন পূরবী ডালিয়া নামে ওই গৃহবধুর গর্ভের সন্তানের (দুই মাসের ভ্রুণের) গর্ভপাত ঘটেছে।
এ ঘটনায় সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় আহত ডালিয়া বাদী হয়ে বাগেরহাট মডেল থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলায় শহরের হাড়িখালী এলাকার দুলাল আকন, তার স্ত্রী পুথী বেগম, মা নূরজাহান বেগম, খালা ফরিদা বেগমসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মারধরের ঘটনায় ডালিয়া স্বামী বাগেরহাট পৌর শহরের হাড়িখালী এলাকার মো. রিয়াজ মোর্শেদও আহত হন।
ওই গৃহবধূর অভিযোগ, দুলাল আকন নামে এক প্রতিবেশী দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির কাছের একটি পুকুর পাড়ে স্থানীয় কয়েক জন সহযোগীদের নিয়ে মাদক সেবন করতো। মাঝে মধ্যেই সে তাকে উক্তত্ত্য করতো। এমনকি একাধিকবার সে তাদের ঘরে প্রবেশ করতে দরজায় এসে কড়া নাড়িয়েছে।
এসব ঘটনার প্রতিবাদ করলে দুলাল ও তার লোকজন তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।
নওশিন পূরবী ডালিয়া বলেন, শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় স্থানীয় কয়েকজনে মিলে আমরা বাড়ির সামনে বনভোজনের আয়োজন করি। সেখানে রান্নার সময় প্রতিবেশি দুলালদের গাছের একটি খেজুরপাতা কুড়িয়ে নেওয়া হয়েছিল। এনিয়ে দুলাল ও তার পরিবারের লোকজনের ক্ষিপ্ত হলে তাদের সঙ্গে ঝগড়াঝাটিও হয়।
‘এর প্রেক্ষিতে শনিবার বিকালে স্বামীর সাথে মোটরসাইকেল যোগে বাসায় ফেরার পথে দুলাল ও তার লোকজন বাড়ির সামনের আমাদের গতিরোধ করে। এসময় দুলাল এবং তার পরিবারের লোকজন কয়েকজন সঙ্গি নিয়ে আমি ও আমার স্বামীকে মারধোর করে।’
তারা আমার পেটের ওপর লথি ও কিলঘুষি মারতে থাকে। এসময় আমি তাদের না মারার অনুরোধ করে বলি- আমি দুই মাসের অন্ত:সত্তা। কিন্তু নিষেধ করার পর তারা আরো বেশী মারধোর করে’ বলে অভিযোগ ওই গৃহবধুর।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের গাইনী বিভাগের ডা. আবু দাইদ খান জানান, ডালিয়া দুই মাসের গর্ভবতী ছিলেন। হাসপাতালে ভর্তির সময়ও তার রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।
আঘাত জনিত রক্তক্ষরণের ফলে তার গর্ভের ভ্রুণ নষ্ট হয়ে যায় এবং গর্ভপাত ঘটে। ডালিয়াকে হাসপাতালে রেখে প্রয়োজনী চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ডালিয়ার স্বামী মো. রিয়াজ মোর্শেদ বলেন, এঘটনার পর থেকে দুলাল ও তার লোকজন বিভিন্ন ভাবে তাদের হুমকি দিচ্ছে। এজন্য আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।
এবিষয়ে বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান খান জানান, পূর্ব বিরোধের জেরে ধরে এ ঘটনা ঘটেছে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে।