বাঘ (রয়েল বেঙ্গল টাইগার) গণনার পর এবার সুন্দরবনে শুরু হয়েছে নোনা পানির কুমির গণনা।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে বাগেরহাটের মংলা উপজেলার ফরেস্ট ঘাট এলাকায় খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক জহির উদ্দিন আহমদ এ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় বেসরকারি বন্যপ্রাণী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন ন্যাচারাল রিসোর্সেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ‘ক্যারিনাম’ কুমির গণনার এ কাজ করছে।
উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন- খুলনা অঞ্চলের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) জাহিদুল কবির, সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) সাইদুল ইসলাম, পশ্চিম বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) সাইদ আলী ও ক্যারিনাম’র নির্বাহী প্রধান এস এম এ রশীদ।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ডিএফও জাহিদুল কবির বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন ন্যাচারাল রিসোর্সেস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (ক্যারিনাম) ও বন বিভাগ যৌথ ভাবে এই জরিপ কাজ শুরু করেছে। সুন্দরবনের চারটি রেঞ্জে এক যোগে শুরু হওয়া এ গণনার কাজে অংশ নিচ্ছেন ৪০ জনের একটি দল।
বিশ্ব ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় তারা ৪টি দলে বিভক্ত হয়ে পুরো ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে এ গণনা’র কাজ করবেন। গণনা কাজে ব্যবহার করা হবে অাধুনিক প্রযুক্তি জিপিএস সিস্টেম।
এতদিন ধরে ১৯৮৫ সালের গণনা অনুযায়ী সুন্দরবন দেড়শ থেকে দুইশ’ কুমির রয়েছে বলে বলা হতো। তবে ওই সংখ্যাও প্রকৃত পক্ষে বাস্তব সম্মত নয় বলে মনে করেন তিনি।
জাহিদুল কবির বলেন, ইতোপূর্বে বিক্ষিপ্তভাবে কুমির গণনার কিছু কাজ হলেও তা থেকে সুন্দরবনে কুমিরের সংখ্যা সম্পর্কে প্রকৃত কোনো ধারণা পাওয়া পায় না।
বিশেষজ্ঞদের মতে উপকূলে লবণাক্ততা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে গোটা সুন্দরবনের ওপরই ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে। এরই মধ্যে দেশে বিপন্ন হয়েছে মিঠা পানির কুমির। অনান্য বন্যপ্রাণীর মতো হুমকিতে নোনা পানির কুমিরও।
এই গণনা শেষে কুমিরের প্রকৃত সংখ্যা জানা গেলে তা রক্ষায় কার্যকারী পদক্ষেপ নেওয়া যাবে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের ডিএফও সাইদুল ইসলাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, সুন্দরবনের কোন কোন এলাকায় কুমির বেশি অবস্থান করে তা জেনে সংরক্ষণের উদ্দেশে এই গণনার কাজ চালানো হচ্ছে। কুমিরের বংশবিস্তার ও জীবনযাত্রার হুমকি সনাক্ত করার পর তা মোকাবেলায় সুন্দরবন বিভাগ ব্যবস্থা নেবে।