বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশে অবৈধ অনুপ্রবেশ করে মাছ শিকারকালে বিভিন্ন সময় আটক ১৭৮ ভারতীয় জেলেকে পুশব্যাক করা হয়েছে।
২০১৫ সালের বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ নৌ বাহিনী সুন্দরবন সংলগ্ন সাগরের বাংলাদেশ জনসীমা থেকে ১৪টি মাছধরা ট্রলারসহ (ফিশিং বোট) তাদের আটক করে।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) ভোর ৬টায় বাগেরহাটের মংলা থেকে ১৪টি ট্রলারসহ ১৭৮ জেলে ভারতের উদ্যেশে যাত্রা করেন।
এর আগে আদালত ও দু’দেশের আইনী প্রকৃয়া শেষে মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে বাগেরহাট কারা কর্তৃপক্ষ ১৭৮ ভারতীয় জেলেকে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারত হাইকমিশনের প্রথম সচিব রমাকান্ত গুপ্ত কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করে।
ভারতীয় জেলেদের মহাজন কলিঙ্গ দাস (৫৫) মুঠোফোনে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, ১২ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তাদের মংলা থানায় আনা হয়। বুধবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে মংলা থানা পুলিশের হেফাজতে থাকা মাছ ধরা সরঞ্জাম ও ১৪টি ফিশিং ট্রলার তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
ভোরে রওনা হওয়া ওই জেলেরা তাদের সাথে করে সঞ্জয় শামন্ত (৩২) নামে ভারতের এক জেলের মৃতদেহও নিয়ে যাচ্ছেন। সঞ্জয় শামন্ত ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগোনা জেলার কাকদ্বীপ এলাকার প্রফল্ল শামন্তের ছেলে।
তিনি আরো জানান, গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর ৫টি ট্রলারসহ ৬১ জেলের সাথে সঞ্জয় শামন্তকে আটক করে বাংলাদেশের নৌ বাহিনী। আটকের পর তাদের বাগেরহাটের মংলায় আনার পথে ভয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে ছিলো। তার মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজের হিমঘরে রাখা ছিলো।
মংলা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মঞ্জুর এলাহি বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, বুধবার রাতে সঞ্জয়ের মৃহদেহ ভারতীয় হাইকমিশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে ওই জেলেদের সাথে তার মরদেহও ভারতের পাঠানো হয়েছে।
মংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ লুৎফর রহমান পুশব্যাকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভোরে মংলা নদীর মংলা ঘাট থেকে ১৭৮ ভারতীয় জেলে তাদের দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন। কাস্ট গার্ড ও নৌ বাহিনীর সদস্যরা ১৪টি ট্রলারসহ ভারতীয় ওই জেলেদের বাংলাদেশের জলসীমা পার করে দিবেন।
আটক মোট ১৭৯ ভারতীয় জেলের মধ্যে ১৬৫ জনকে ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত প্রজনন মৌসুমে বাংলাদেশে ইলিশ মাছ আহরণ ও বিক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা চলা কালিন সময়ে আটক করারে ছিলো নৌ বাহিনী।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট একটি (এফবি স্বর্ণ প্রভা), ২৮ সেপ্টেম্বর ৫টি (এফবি ত্রিপদী, এফবি সত্য নারায়ণ, এফবি দাখিনা শহর, এফবি লক্ষী নারায়ণ ও এফবি প্রদীপ) ও ২৯ সেপ্টেম্বর ৮টি ভারতীয় ট্রলারসহ ওই জেলেকে আটক করা হয়েছিলো। তাদের সবার বাড়ি ভারতের চব্বিশ পরগনা ও কলকাতা জেলার বিভিন্ন এলাকায়।
আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে ১৯৮৩ সালের সামুদ্রীক মৎস অধ্যাদেশ ২২ ধারা অনুয়ায়ী তিনটি পৃথক মামলা করা হয়। নৌ বাহিনীর দায়েরকৃত মামালা গুলোতে পুলিশ আদাতলে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার পর আদালত তাদের অবহতি দেয়।