সুন্দরবনের দুবলা জেল পল্লী ও বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ ধরার সময় অর্ধশতাধিক জেলেকে দস্যুরা অপহরণ করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) সাগরের মান্দারবাড়িয়া ও দুবলার চরের আলোরকোলে এ ঘটনা ঘটে। দস্যুরা এসময় জেলেদের আহরিত মাছ ও অনান্য মালামাল লুটে নেয়।
বনদস্যু মাস্টার বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিপনের দাবিতে ওই জেলেদের অপহরণ করেছে বলে জেলে-মাহাজন সূত্রে জানা গেছে।
এনিয়ে গত এক সপ্তাহে সাগর ও সুন্দরবন থেকে প্রায় দেড় শতাধিক জেলেকে মুক্তিপনের দাবিতে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দুবলা জেলে পল্লী থেকে বাগেরহাটের রামপালের এক জেলে জানান, তার মেঝ ভাইসহ অন্তত্য একশ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে দস্যুরা।
দস্যুদের হাতে অপহৃত জেলে মো. খোকন হাওলাদালের ছেলে মো. সোহানুর রহমান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, সুন্দরবনের দুবলার জেলে পল্লীতে থাকা তার এক নিকট আত্মীয় ফোনে বাবাকে অপহরণের কথা জানিয়েছে। শুনেছি আরো অনেক জেলেদের ধরে নিয়েছে গেছে। এখনও মুক্তিপণের জন্য কোন টাকা দাবি করে নি দস্যুরা। পরে ফোন করে টাকার অঙ্ক জানাবে বলে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় দস্যুরা বলে গছে বলে শুনেছি।
সুন্দরবনের দুবলার চর ফিশারমেন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল আহমেদ জানান, শুক্রবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে মাষ্টার বাহিনীর ২০ থেকে ২৫ জন সশস্ত্র দস্যু হানা দিয়ে অর্ধশতাধিক জেলেকে ধরে নিয়ে যায়।
অপহৃত জেলেদের বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল ও খুলনার কয়রা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বলে জানা গেছে।
দুবলা জেলে পল্লীর একাধিক জেলে মুঠফোনে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানিয়েছেন, গত কয়েক সপ্তাহে সাগর ও সুন্দরবনে বিভন্ন বাহিনীর নামে দস্যুরা একের পর এক হানা দিয়ে অপরহণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে। মুক্তিপণ দিতে দেরি হলে দস্যুরা জেলেদের উপর অমানবিক নির্যাতন চালাছে।
দস্যুরা এতো দিন সাগর ও নদী থেকে জেলেদের অহরণ করলেও চলতি মৌসুমে এই প্রথম জেলে পল্লী থেকে মুক্তিপণের দাবিতে জেলে-মাহাজনদের ধরে নিয়ে গেছে।
অভিযোগ আছে, দস্যু বাহিনীর সদস্যরা অত্যাধুনিক দ্রুতগামী ট্রলার ও অস্ত্র ব্যবহার করে। এর সাথে জড়িত এক শ্রেণির প্রভাবশালীরা জাড়িত রয়েছে। এই দস্যুরাই বিভিন্ন ভাবে বনপ্রাণী শিকার ও পাচারের সাথে জড়িত।
শরণখোলা উপজেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন জানান, একের পর এক অপহরণের ঘটনায় জেলেরা এখন সাগরে যেতে ভয় পাচ্ছে। মহানজনরাও মুক্তিপণ দিতে দিতে হতাশ হয়ে পড়েছেন। দস্যুদমন ও জেলেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে পেশা ছেড়ে দেয়ারও চিন্তা করছেন।
র্যাব-৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবির জানান, অপহরণের খবর শোনার পর থেকে র্যাব গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়িয়েছে। জিম্মিদের উদ্ধারেও তৎপরতা শুরু হয়েছে।