বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে শুরু হয়েছে ৬ দিনব্যাপী ‘কালা চাঁদ’ মেলা। স্থানীয়দের ভাষ্য, এবারের আয়োজন ৩শ’ ৩৭তম।
বুধবার (৯ ডিসেম্বর) থেকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা সদরের বারইখালী কালা চাঁদ আওলিয়ার মাজার প্রাঙ্গনে ঐতিহ্যবাহী এই গ্রামীণ মেলা বসেছে।
স্থানীয় প্রবীনরা জানান, প্রায় সাড়ে ৩’শ বছর পূর্বে কালাচাঁদ ফাকির নামে এক ব্যাক্তি মোরেলগঞ্জের বারইখালী গ্রামে এসে বসতি গাড়েন। জঙ্গল আবাদ করেন। সেই থেকে এখানে ফকিরের তকিয়া নামে একটি মৌজা পরিচিতি পায়।
বাংলা সনের হিসেবে ২৫ অগ্রহায়ন বারইখালীতে কালা চাঁদ ফকিরের মৃত্যু হয়। এর পর থেকে এই দিনে ফকিরদের আসর বসত এখানে।
মাজারে খাদেম মো. ডাবলু কাজী জানান, প্রতি বছর কালা চাঁদ আওলিয়ার মৃত্যু বার্ষিকিতে এখানে গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়। সে অনুযায়ী এবারের আয়োজন ৩শ’ ৩৭তম।
ডাবলু কাজী বলেন, ‘প্রথম দিকে এখানে শুধু মাত্র এক রাতের জন্য ফকিরদের আসর বসত। কালে কালে তা মেলায় রূপ নেয়। ৯০’র দশকেও এখানে এক দিনের মেলা হতো। ২০১০ সাল থেকে মেলার পরিধি ও স্থায়ীত্ব বাড়ে।’
এবারের মেলা সুষ্ঠ ভাবে পরিচালনার জন্য একটি স্থায়ী ও ৫টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মেলা কমটির সভাপতি মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বলেন, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসকের অনুমোদিতে এবার ৬ দিনব্যাপী কালা চাঁদের মেলার আয়োজন করা হয়েছে। মেলায় দুই শতাধীক ষ্টলে বিভিন্ন পন্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।
স্থানীয়রা জানান, মেলায় নাগরদোলা, ট্রেন, চরকা, রকমারী খেলনা, ফার্নিচারসহ বিভিন্ন ধরনের মনোহরী দোকান বসেছে। মেলা ভাঙ্গার পরেও কিছু কিছু দোকান প্রায় ১ মাস এখানে থেকে যাবে।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুল আলম জানান, নতুন থানা ভবন সংলগ্ন এই মেলা এলাকায় কালা চাঁদের ভক্ত, ব্যাবসায়ী ও দর্শনার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ, আনাসার ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী দল নিয়োগ করা হয়েছে।
মাজারের খাদেম মাসুদ খান চুন্নু মেলায় আসা সকল দর্শনার্থীদের জন্য বুধবার দুপুর থেকে খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। একটি মহিষ, দু’টি খাসি ও এক টন চালের খাবার তৈরি করা হচ্ছে সর্বসাধারণের জন্য।