বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বিএনপিকর্মী আব্দুর রহিম ফকিরকে হত্যার দায়ে দুই সহোদরসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
হত্যাকান্ডের দীর্ঘ্য ১১ বছর মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) সকালে বাগেরহাট দায়রা জজ আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান খান এ রায় দেন।
রায় ঘোষণার সময় মামলার এজহারভুক্ত ১৯ আসামির সবাই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বাকি ১৬ আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন বিচারক।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্তরা হলেন- বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ঝিলবুনিয়া গ্রামের মমিন উদ্দিন শেখের ছেলে সোহবান শেখ ও শাজাহান শেখ এবং একই গ্রামের মৃত মনসুর শেখের ছেলে বারেক শেখ।
দণ্ডিতদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৪ সালের ১৩ নভেম্বর পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মোরেলগঞ্জ উপজেলার ঝিলবুনিয়া গ্রামের আব্দুর রহিম ফকিরকে স্থানীয় কামলা বাজার থেকে আসামিরা ধরে নিয়ে যায়। পরে আসামি সোবাহান শেখ ও শাহাজান শেখের বড়িতে নিয়ে হাত-পা বেঁধে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় তাকে।
ঘটনায় পরদিন ১৪ নভেম্বর নিহতের বাবা চাহেব আলী ফকির ২৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় ৩০-৪০ জনকে আসামি করে মোরেলগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোরেলগঞ্জ থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কুদ্দুস ২০০৫ সালের ৩০ মার্চ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) প্রদান করেন। চার্জশিটে আসামিদের সঙ্গে নিহত বিএনপিকর্মী আব্দুর রহিম ফকিরের পূর্বশত্রুতা ও রাজনৈতিক বিরোধ ছিল বলে উল্লেখ করা হয়।
দীর্ঘ শুনানিতে বিচারক ২৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও অন্যান্য তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মঙ্গলবার এ রায় দেন।
কায়ুম শিকদার, শাজাহান হাওলাদার, শাহীদা বেগম, স্বরূপজান বিবি, মনোয়ারা বেগম, জোসনা বেগম, আফজাল শেখ, রফিক শেখ, আলমগীর হাওলাদার, শাহীন শিকদার, আকরাম শেখ, আক্কাস সরদার, সোবহান শেখ, আনছার হাওলাদার, আবজাল শেখ ও আকা শেখ খালাস পেয়েছেন। এদের সবার বাড়ি ঝিলবুনিয়া গ্রামে।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটার অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আলী এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আলী আকবর।