জালিয়াতির মাধ্যমে সাড়ে তিন কোটির অধিক টাকা আত্মসাত করায় পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনের (পিডিবিএফ) ছয় কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
চাকরিচ্যুত ছয় কর্মকর্তা সরকারি ক্ষুদ্রঋণ প্রদান সংস্থা পিডিবিএফ-এর বাগেরহাট সদর উপজেলা ও পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলা অফিসে কর্মরত ছিলেন।
শাখা দু’টিতে কর্মরত থাকা অবস্থায় ভুয়া ব্যক্তির নামে ঋণ বরাদ্দ দেখিয়ে এবং ঋণ গ্রহিতাদের ফেরৎ দেওয়া কিস্তির টাকা জমা না দিয়ে এই বিপুল অর্থ আত্মসাত করেন তারা।
পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউণ্ডেশন-পিডিবিএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহাবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত আদেশ রোববার অভিযুক্তদের কাছে পৌঁছেছে।
পিডিবিএফের পিরোজপুর অঞ্চলের উপ-পরিচালক শামীম আরা স্বপ্না বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউণ্ডেশনের বাগেরহাট সদর উপজেলা অফিসের কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় পাঁচ জনকে এবং একই ধরনের পৃথক ঘটনায় মঠবাড়িয়া উপজেলার এক কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। তবে আত্মসাতকৃত টাকার পরিমাণ সুনির্দিষ্ট ভাবে জানাতে পারেন নি তিনি।
চাকরিচ্যুতরা হলেন- বাগেরহাট সদর উপজেলা সাবেক দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা এসএমএ লতিফ, একই উপজেলার সহকারী দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা পুলক চন্দ্র দাস ও রিতা রাণী রায়, মাঠ সংগঠক মো. কামরুল ইসলাম, হিসাব সহকারী মো. ইব্রাহিম হোসেন এবং পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তা সুদেব কুমার মুশিদ।
পিডিবিএফের বাগেরহাট সদর উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাগেরহাটের ওই পাঁচ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ তদন্তে ওই বছরের আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে খুলনা, বরিশাল ও ঢাকা থেকে আসা নিরীক্ষক দল পৃথক তিনটি নিরীক্ষা করেন।
প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ওই বছরের ৩ অক্টোবর তাদের বাগেরহাট সদর উপজেলা কার্যালয় থেকে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ দিয়ে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিডিবিএফের বাগেরহাট সদর উপজেলার একাধিক কর্মকর্তা বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, টাকা আত্মসাতের ঘটনা তদন্তে দেখা যায় উপজেলা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা পরস্পর যোগসাজশে মোট তিন কোটি ৭৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এই ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ সব ধরনের বিধিবদ্ধ প্রক্রিয়া গ্রহণ শেষে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।