‘বিদ্যুৎ উৎপাদনের অনেক বিকল্প আছে। কিন্তু সুন্দরবনের কোনো বিকল্প নেই। কাজেই ৮।’ বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি।
রোববার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় খুলনা-মংলা মহাসড়কের কাটাখালী মোড়ে ‘ঢাকা-সুন্দরবন রোডমার্চে’র সমাপনী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সুন্দরবন আমাদের সমস্ত প্রকৃতিকে রক্ষা করছে। তাই সুন্দরবনকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। এই প্রকল্প রুখতে যতো রক্তচক্ষুই আসুক আমরা লড়াই থামাব না।
এর আগে সন্ধ্যা সোয়া ৬টা নাগাদ রামপালে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিলের দাবিতে রোডমার্চটি খুলনা থেকে বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালি মোড়ে পৌঁছায়।
আগে থেকেই সেখানে মোতায়েন ছিলো বিপুল সংখ্যক পুলিশ। তবে কোনো বিঘ্ন ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় তিন দিনের এ কর্মসূচি।
সমাবেশে গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক বলেন, ‘শিল্পের জন্য বিদ্যুৎ প্রয়োজন। তবে সেই বিদ্যুৎ পেতে হবে সুন্দরবন ও পরিবেশকে রক্ষা করে। সুন্দরবনের পাশে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হলে ২০-২৫ বছরের মধ্যে সুন্দরবন হারিয়ে যাবে। সাতক্ষীরা থেকে বরিশাল পর্যন্ত সুন্দরবন উপকূলের চার কোটি মানুষের জীবিকা নষ্ট হবে। হারিয়ে যাবে সুন্দরবনের বিশাল প্রাণ বৈচিত্র ও মৎস্য ভাণ্ডার।’
গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির মোশারেফা মিশু বলেন, ‘পথে হামলা উপেক্ষা করে আমরা আমাদের কর্মসূচি সম্পূর্ণ করতে এখানে এসেছি। রক্তচক্ষুকে আমরা ভয় পাই না। আমরা মানুষ আর প্রকৃতিকে বাঁচাতে লড়াই করছি। সরকারকে আমাদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে হবে।’
গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার বাগেরহাট জেলা সমন্বয়ক কমরেড রণজিৎ চট্টপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারেফ হোসেন নান্নু, সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বহ্নিশিখা জামাল প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে আগামী ২০ অক্টোবর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ এবং ৫ নভেম্বর দেশব্যাপী ‘সুন্দরবন সংহতি দিবস’ পালনের কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়।
প্রসঙ্গত, বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার সাপমারী-কৈগর্দদাশকাঠি মৌজায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও ভারতের ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কোম্পানি (এনটিপিসি) যৌথভাবে এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছে।