নানা আয়োজনে পালিত হলো তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ‘র ৫৯তম জন্মদিন।
শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) দিনভর বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কবির গ্রামের বাড়ি বাগেরহাটের মংলা উপজেলার মিঠাখালীতে দিনটি উদযাপন করেছে রুদ্র স্মৃতি সংসদ।
কবি স্মরণে সকালে রুদ্র স্মৃতি সংসদ চত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা উপজেলার মিঠাখালী বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কবির সমাধিস্থলে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ এতে অংশ নেন। পরে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
সন্ধ্যায় রুদ্রের গ্রামের বাড়ি মিঠাখালীতে স্মরণসভা ও রুদ্র সংগীতের আয়োজন করা হয়।
সংসদের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আফজাল হোসেনের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন- রুদ্র স্মৃতি সংসদের সভাপতি ও কবির ছোট ভাই সুমেল সারাফাত, মংলার শিরিয়া বেগম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক ওবায়দুল ইসলাম, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আমিরুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ আমাদের কাছে এখনও সেই ৩৪ বছরের চির তরুণ। তিনি ছিলেন তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক। সমাজের সব বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে তিনি কলম ধরেছেন। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন তিনি তার সৃষ্ট কবিতা-গানে বেঁচে থাকবেন।
রুদ্রের কবিতা ও গান এখন দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয়।
স্মরণসভা শেষে রুদ্রের কবিতা ও গান পরিবেশন করেন রুদ্রের গড়া সংগঠন ‘অন্তর বাজাও’ এর স্থানীয় শিল্পীরা। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রুদ্র স্মৃতি সংসদের সম্পাদক আসাদুজ্জামান টিটো।
মাত্র ৩৪ বছরের জীবনে রুদ্র বেশ কিছু কাব্যগ্রন্থ রচনা করেন। তার কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে-উপদ্রুত উপকূল (১৯৭৯), ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম (১৯৮১), মানুষের মানচিত্র (১৯৮৪), ছোবল (১৯৮৭), গল্প (১৯৮৭), দিয়েছিলে সকল আকাশ (১৯৮৮) এবং মৌলিক মুখোশ (১৯৯০)।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী পরিস্থিতিকে অবলম্বন করে তিনি ‘বিষ বিরিক্ষের বীজ’ নামে একটি কাব্যনাট্যও রচনা করেন। এছাড়া, তিনি বেশ কিছু গল্পও লিখেছেন। সংগীতের বীজও রুদ্রের রক্তে প্রোথিত ছিল।
তার রচিত ও সুরারোপিত ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ বিখ্যাত গানটি দুই বাংলায় অসম্ভব জনপ্রিয়।
১৯৫৬ সালের এই দিনে (১৬ অক্টোবর) তিনি জন্মগ্রহণ করেন। মৃত্যুবরণ করেন ১৯৯১ সালে।