নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের পূর্বশর্ত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা

‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা একটি নিরপেক্ষ রাষ্ট্রের পূর্বশর্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।

বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে বাগেরহাট জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মি. সিনহা বলেন, ‘যে দেশে আইনের শাসন নেই, সে দেশ যতই উন্নত হোক না কেন, যতই টাকা-পয়সার মালিক হোক না কেন মর্যাদা পাবে না। কারণ টাকার মালিক হলেও তাদের ডেমোক্রেসি নেই।  আইনের শাসন নেই।’

এ সময় তিনি চীন ও আমেরিকার উদাহরণ টেনে বলেন, ‘যেমন দেখুন চীন। তারা যতই উন্নত হোক, তাদের কিন্তু ডেমোক্রেসি নেই, আইনের শাসন নেই। এখানে কিন্তু তারা সেই মর্যাদা পাচ্ছে না। অথচ আমেরিকায়, তারা যতই বাড়াবাড়ি করুক। তাদের দেশে আইনের শাসন আছে, ডেমোক্রেসি আছে। তাই তারা আজ বিশ্বে উন্নত, নেতৃত্ব দিতে পারছে।’

‘আমাদের দেশের জনগণ সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। জনগণ যদি দেখাতে পারে অধিকার থেকে বঞ্ছিত হচ্ছে, তাহলে বিচারকরা সরকারের বিরুদ্ধেও রায় দেয়। অথচ সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধান বিচারপতিরা তুচ্ছ কারণে জেল খাটছেন। সেখানে আইনের শাসন বলতে কিছু নেই।’

‘সেই তুলনায় আমরা গরিব হতে পারি। কিন্তু আমরা আইনের শাসনের ক্ষেত্রে বলতে পারি, সারা পৃথিবীতে যতগুলো মুসলিম রাষ্ট্র আছে আইনের শাসনের ক্ষেত্রে আমরা সবার উপরে।’

বাগেরহাটের আইনজীবীদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা মামলা জট কমাতে আইনজীবীদের প্রতি সহযোগিতাও করার আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। বর্তমানে বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের কোনো চাপ নেই।

বাগেরহাট জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম আব্দুল হাইয়ের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও বাগেরহাট-২ সদর আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা, জেলা ও দায়রা জজ মিজানুর রহমান খান, আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন প্রমুখ।

এর আগে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বাগেরহাট জেলা দায়রা জজ ও ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পরিদর্শন করেন।