পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জমে উঠছে বাগেরহাটের পশুর হাটগুলো। স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে এবার জেলায় ছোট-বড় মোট ৫০টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে।
তবে গত বছরগুলোর চেয়ে এবার দাম কিছুটা চড়া বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। তাই অনেকেই হাট ঘুরে কোরবানির জন্য গরু বা ছাগল না কিনেই ঘরে ফিরছেন।
শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) পবিত্র ঈদুল আজহা। এ উপলক্ষে শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) থেকে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত হাটে বেচাকেনা চলবে। স্থানীয় খামারি ও জেলার বিভিন্ন প্রান্তের কৃষকেরা বাড়িতে পালিত গরু নিয়ে আসছেন হাটে।
জেলার সদরের যাত্রাপুর, মোল্লাহাটের উদয়পুরসহ কয়েকটি বড় হাটে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ব্যাপারিরাও এসেছেন গরু নিয়ে। সাধ্যের সঙ্গে তাল মেলাতে ক্রেতাদের ঝোঁক ছোট ও মাঝারি আকৃতির গরুর দিকে।
কোরবানির জন্য গরু কিনতে যাত্রাপুর হাটে আসা বাগেরহাট সদরের আব্দুল জব্বার মল্লিক বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, আজই প্রথম হাটে এলাম। এখনো পুরো হাট ঘুরে দেখিনি। এবার গরুর দাম একটু বেশি।
সাইফুল ইসলাম পাভেল বলেন, যাত্রাপুর হাটে গরু-ছাগলের আমাদনি বেশ ভালো। তবে বিক্রেতারা শুরুতেই চড়া দাম হাকাচ্ছেন। এ কারণে অনেক ক্রেতাই কোরবানির পশু কিনতে পারছেন না।
তবে পরে দাম কমবে বলে ধারণা তার।
যাত্রাপুর হাটে গরু বিক্রি করতে এসেছেন ইমরান। তিনি বলেন, ঈদকে সামনে রেখে পাঁচটি গরু কিনে তিন মাস ধরে বাড়িতে লালনপালন করেছি। এবার খরচ অনেক বেশি হয়েছে। হাট শুরুর তিনদিনেও কোনো গরু বিক্রি হয়নি। অনেকে দামদর করলেও এখনো কোনো ক্রেতা পাইনি।
হাটে ফকিরহাট থেকে গরু নিয়ে আসা ব্যাপারি আবুল কালাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, এ বছর গো-খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকদের লালনপালন করতে খরচ অনেক বেশি হয়েছে। তাই এবার দাম কিছুটা চড়া। ক্রেতারা যে দাম বলছেন তাতে গরু বিক্রি করলে লোকসান গুণতে হবে।
যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মতিন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, যাত্রাপুরে কোরবানির পশুর হাট প্রায় শত বছরের পুরনো ঐহিত্যবাহী হাট। এখনো (২১ সেপ্টেম্বর) হাটে ভারতীয় গরু ওঠেনি, সবই স্থানীয়ভাবে পালিত। এ কারণে দাম একটু চড়া।
দুই/তিনদিনের মধেই দাম কমতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
যাত্রাপুর বাজার ও পশুর হাট কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ মশিউর রহমান পলাশ বলেন, বাজারে প্রচুর ক্রেতা রয়েছে। সবাই ঘুরছে, দেখছে। শেষ দিকে দাম কমার প্রত্যাশায় এখনো বেচা-কেনা পুরোপুরি জমে ওঠেনি।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে জেলায় ৩৫টি কোরবানির পশুর হাট বসেছে। এসব হাটে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও দালালদের দৌরাত্ম্য রোধে পুলিশের কঠোর নজরদারি রয়েছে।
এছাড়া জাল টাকা শনাক্ত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে হাটে বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনের সহায়তা নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।