বাগেরহাটের রামপালে গায়ের জোরে সরকার বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান করছে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
বৃহস্পতিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে আয়োজিত এক প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সাউথ এশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস (এসএএইচআর) নামের বেসরকারি সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হলে সুন্দরবনসহ ওই এলাকার প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য বড় ধরনের হুমকির মুখে পড়বে।
এসএএইচআর রামপাল উপজেলায় প্রস্তাবিত কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এলাকার মানবাধিকার ও পরিবেশগত প্রভাব বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম পরিচালনা করে।
এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গত ৫ এপ্রিল থেকে ১২ এপ্রিল সংস্থাটির একটি তথ্যানুসন্ধানী দল বাংলাদেশ সফর করে। সফরে তারা প্রকল্পসম্পৃক্ত সরকারি-বেসরকারি যথাযথ কর্তৃপক্ষ, ব্যক্তিদের পাশাপাশি প্রকল্প এলাকার ভুক্তভোগী গ্রামবাসী, পরিবেশবিদ, আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সব শেষে তথ্যানুসন্ধানী দলের সদস্যগণ যে প্রতিবেদন তৈরি করেন, সেটিই অনুষ্ঠানে প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি সংস্থার ওয়েবসাইটে (http://www.southasianrights.org/wp-content/uploads/2015/09/Report-of-the-FFM-Rampa-Bangladesh.pdf) পাওয়া যাবে।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংস্থাটির বাংলাদেশ’র ব্যুরো সদস্য খুশী কবির। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
সংস্থার পক্ষ থেকে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সাউথ এশিয়ান ফর হিউম্যান রাইটস’র সদস্য শরীফ জামিল।
প্রতিবেদনের ওপর মতামত ব্যক্ত করেন সংস্থাটির বাংলাদেশ ব্যুরো’র সদস্য মানবাধিকার নেত্রী ও টিআইবি সভাপতি অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ড. আব্দুল মতিন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানজীম উদ্দিন খান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এসএএইচআর’র সমন্বয়কারী দিক্ষা ইলাঙ্গাসিংহে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন প্রতিরোধ করতে গণসচেতনতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন। তারা বলেন, সরকার কারও যৌক্তিক কথা না শুনে এক রকম জবরদস্তি করে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন চায়। আমরা এটি হতে দেবো না। এই প্রকল্পের মৃত্যু দেখতে চাই।
এসএএইচআর দক্ষিণ এশিয়ার সমমনা কর্মী, গবেষক ও প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে মানবাধিকার বিষয়ক একটি সংস্থা- যেটি শুরু থেকেই জাতীয় এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে বিভিন্ন গবেষণা, তথ্যানুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সংস্থাটি দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সুদৃঢ় গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকারের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।