বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে শিক্ষকের প্রহরে গুরুত্বর আহত ইয়াছিন জমাদ্দার (১২) হাসপাতালে বসে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে।
শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসে প্রাথমিকের সমাপনী’র মডেল টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নেয় ওই ছাত্র।
ইয়াছিন উপজেলার (২৭০নং) উত্তর কুমারিয়াজোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র।
শনিবার মডেল টেস্টে তার অংক বিষয়ের পরিক্ষা ছিলো। পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য বৃহস্পতিবার বিকেলে দেওয়া একটি অংক কশতে না পারায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাকে এলোপাতাড়ি বেত্রঘাত করলে গুরুতর আহত হয় ইয়াছিন।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কাজী মজিবর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মুফতি কামাল হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ‘শুক্রবার শিশু ইয়াছিনকে এখানে ভর্তি করা হয়। তার শরীরের পিঠ, হাত, পাসহ বিভিন্ন স্থানে ১৫-১৬টি বেত্রাঘতের স্পষ্ট দাগ রয়েছে। এসব আঘাতে শরীরের মাংস কেটে রক্ত জমাট বেধে দাগ পড়ে গেছে।’
ইয়াছিনের বাবা ফারুক জমাদ্দার ও স্থানীয় ইউপি সদস্য কামরুল মুন্সী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী মডেল টেস্ট পরীক্ষা চলছিলো। শনিবার ছিল অংক পরীক্ষা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সুফিয়ান তাদের প্রস্তুতিমূলক ক্লাশ নিচ্ছিলেন। এ সময় অংক করতে না পারায় প্রধান শিক্ষক ইয়াছিনকে অমানবিক ভাবে বেত দিয়ে পিটায়। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত দাগ হয়ে যায়।
বাড়ি ফেরার পর প্রচ- ব্যাথা ও জ্বর হলে ইয়াছিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এদিকে ঘটনার পর থেক অভিযুক্ত ঐ প্রধান শিক্ষক আত্মগোপণ করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ‘শুক্রবার রাতে ঘটনাটি জানতে পেরে আমি হাসপাতালের বিছানায় ছাত্রটির অংক পরীক্ষা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের ঘটনা জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাসুম বিল্লাহ বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, শিশুদের প্রতি এধরণের আচরণ বাঞ্ছনীয় না। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদেও সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেয়া আছে।
আমরা ঘটনাটি তদন্ত করবো। ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরো জানান, উপজেলা সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা বশিরুল আলম শনিবার সকালে হাসপাতালে ইয়াছিনের পরীক্ষা গ্রহন করেন।
তবে, এ বিষয়ে জানতে প্রধান শিক্ষক আবু সুফিয়ানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মুঠোফোন বন্ধ থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।