স্পেশাল ইকোনোমিক জোন বা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়তে বাগেরহাটের মংলায় ভারতকে জমি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি-বিষয়ক উপদেষ্টা।
সোমবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স মিলনায়তনে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় একথা জানান প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান।
তিনি বলেন, মংলায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে জমি চেয়েছিল ভারত ও চীন। এর মধ্যে ভারতকে মংলা বন্দরের কাছে জমি দেওয়া হবে।
ড. মশিউর আরো বলেন, মংলা বন্দরকে আরো কার্যকর করতে সরকার দ্রুত বিমান বন্দরটি চালু করার উদ্যোগ নিয়েছেন। মংলা-ঘঘিয়াখালী চ্যানেল খননের পাশাপাশি পশুর চ্যানেল খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শুরু হয়েছে মংলা-খুলনা রেল লাইনের নির্মান কাজ।
মংলা ইপিজেডে শিল্প-কারখানা নির্মাণের আগ্রহ দেখাচ্ছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান। এরই মধ্যে ভারত, চীন, জাপান এখানে বিনিয়োগ করেছে।
|| দেশের প্রথম অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে মংলায়
এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে মংলা, খুলনা, বাগেরহাটসহ গোটা দক্ষিণ অঞ্চলের অর্থনৈতিক চিত্র পাল্টে যাবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা।
চলতি বছরের ২৮ মে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য বাগেরহাটের মংলা ও কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় জমি চেয়েছে ভারত।
বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি শাহাজাহান মিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাগেরহাট-৪ আসনের সংসদসদস্য ডা. মোজাম্মেল হোসেন, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদসদস্য অ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশা, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম, পুলিশ সুপার নিজামুল হক মোল্লা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে চেম্বার নেতারা প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টার কাছে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠান শেষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং এফবিসিসিআই’র সহায়তায় ‘নারী উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ বিষয়ে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সেলাই মেশিন তুলে ড. মশিউর রহমান।
এর আগে সকালে বাগেরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে দিনব্যাপী ক্যান্সার সচেতনতা, নির্ণয় ও চিকিৎসা ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন তিনি।
নিজের শিক্ষা জীবনের দুই প্রতিষ্ঠানে –
দুপুরে বাগেরহাট বহুমুখী কলেজিয়েট স্কুল ও সরকারি পিসি কলেজে শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি-বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান।
বাগেরহাট সরকারি পিসি কলেজ ও বাগেরহাট বহুমুখী কলেজিয়েট স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন তিনি।
বাগেরহাটে এসেই তাই তিনি ছুটে গিয়েছিলেন তার প্রিয় এই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। সেখানে শিক্ষর্থী-শিক্ষক ও সহপাঠিদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় এবং সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় অংশ নেন তিনি।
ঘুরে-ঘুরে দেখেন ছাত্র আবস্থার তাঁর হৃদয়ে স্থান করে নেয়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দু’টি। এসময় ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দু’টির আধুনিকায়ন ও ভবনসহ অবকাঠামো নির্মাণের আশ্বাস দেন তিনি।
ড. মসিউর রহমানের ছাত্র জীবণে তার পিতা বাগেরহাট সদরে তৎকালিন সার্কেল অফিসার (সিও) ছিলেন। ওই সময় প্রায় ৫ বছর বাগেরহাট বহুমুখী কলেজিয়েট স্কুল ও সরকারি পিসি কলেজে লেখাপড়া করেন তিনি।
এই দুই প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বোর্ডের মেধা তালিকায় স্থান করে নেন তিনি।