প্রচ্ছদ / খবর / রামপালে ৮২ খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণ শুরু

রামপালে ৮২ খালের অবৈধ বাঁধ অপসারণ শুরু

Bagerhat-Rampal-Pic-1(30-07-2015)মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ফের চ্যানেল সংলগ্ন রামপালের ৮২টি খালে অবৈধ ভাবে দেওয়া বাঁধ অপসারণ শুরু হয়েছে।

বুধবার (০৫ আগস্ট) সকালে রামপাল উপজেলার বাঁশতলী ইউনিয়নের স্যাদলার খালের ওপর নির্মিত একটি বাঁধ কেটে এ অপসারণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসন মো. জাহাঙ্গীর আলম।

মংলা বন্দরের আন্তর্জাতিক নৌরুট চালুর সার্থে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রথম দফা অবৈধ বাঁধ উচ্ছেদের পর আবারো প্রবাহমান খালগুলোতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করে প্রভাবশালীরা। এর প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের ৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ই‌উএনও) নেতৃত্বে ৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালত সকাল থেকে খালের ওপর পুণরায় নির্মিত অবৈধ বাঁধ অপসারণে অভিযান শুরু করে।

দ্বিতীয় দফায় বাঁধ অপসারণের পাশাপাশি কোথাও বাঁধ নির্মাণে জড়িতদের পেলে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

এরআগে প্রথম দফায় ২০১৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর অবৈধ বাঁধগুলো অপসারণ করা হলেও কিছুদিন পরই সরকারি খালগুলোতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল।

উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, এসব খালে বাঁধ দিয়ে প্রভাবশালীরা চিংড়িসহ মাছের চাষ করায় ছোট-বড় দুই শতাধিক খাল এখন মৃত প্রায়। এতে মংলা-ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ চ্যানেলটি পলি জমে দ্রুত নাব্যতা হারাচ্ছে।

Bagerhat-Rampal-Pic-2(05-08-2015)রামপালের বাঁশতলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ আলী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, কেবল বাঁধ অপসারণই নয়, এগুলোর নাব্যতা রক্ষায় দ্রুত খনন প্রযোজন। এছাড়া জোয়ারের পানি থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষায় স্লুইজ গেট নির্মাণেরও দাবি জানান তিনি।

এদিকে বাঁধ অপসারণের কারনে স্থানীয় সাধরণ জনগন খুশি হলেও কারো কারো কন্ঠে বাঁধ কাটার বিরোধিতা লক্ষ করা গেছে।

বাঁশতলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ও ৪নং ইউপি সদস্য গাজি আলমগির হোসেন বলেন, ৩০ বছর বছর ধরে এই খালে (স্যাদলার খাল) বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা হচ্ছে। খালটিতে ছোট-বড় প্রায় অর্ধশত বাঁধ রয়েছে।

বাঁধ না থাকলে এলকাবাসি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাবে মন্তব্য করে তিনি জানান, তিন মাস আগে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে খালের এই অংশের বাঁধ অপসারণ করা হয়। পরে স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সকলের অনুমতি নিয়েই এক মাস আগে আবারো বাঁধ দেওয়া হয়।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছু ইউনিয়নের ইসলামাবাদ গ্রামের এক ব্যক্তি জানান, খাল দখলের সাথে স্থানীয় অনেক জন প্রতিনিধিরাও জড়িত। তাদের কারনেই সরকারি খালগুলো দখল মুক্ত করা যাছে না।

উপজেলার গিলাতলা গ্রামের হওলাদার ফরিদ হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ‘আমাগো রামপাল এবং মংলা- এই এলাকার কিছু লোকজন পরের জমি আর সরকারি খাল আটকায়ে বাঁধ দিয়ে খাতি খাতি জি (জিহবা) লম্বা হয়ে গেছে। তারা মাইনশের (মানুষের) জমি দখল করে খালিও (ভোগ করলেও) হারির টাকা (জমির জন্য বর্ষিক মূল্য) দে না। এখন সরকারের লোক বাঁধ কাটলিও দাড়ায় দাড়ায় দেখেও কিছু পারতিছে না।’

রামপালের ইউএনও রাজিব কুমার রায় জানান, সব খালের বাঁধ অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর আলম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, আগে মংলা ও রামপাল উপজেলার ৩২টি খালের দুই শতাধিক অবৈধ বাঁধ উচ্ছেদ করে প্রশাসন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি এসব খালে আবারো বাঁধ দেওয়ায় পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এসব বাঁধ ফের অপসারণ শুরু হয়েছে।

রামপালের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিব কুমার রায় জানান, সরকারের রেকডিও সকল খালের বাঁধ অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের এই অভিযান অব্যহত থাকবে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, ইতিপূর্বে চ্যালেন সংলগ্ন মংলা ও রামপাল উপজেলার ৩২টি খালের দুই শতাধিক অবৈধ বাঁধ উচ্ছেদ করে প্রশাসন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিছু অসাধু ব্যক্তি এসব খালে আবারো বাঁধ দেওয়ায় পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এসব বাঁধ ফের অপসারণ শুরু হয়েছে। এ লক্ষে জেলা থেকে চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও রামপালের ইউএনওসহ ৫টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পুলিশ ও শ্রমিকদের নিয়ে বাঁধ অপশারণের কাজ করছে।

০৫ আগস্ট :: স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
এস/আইএইচ/এনআরএ/বিআই

About বাগেরহাট ইনফো নিউজ