ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ মোকাবেলায় সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বাগেরহাটের প্রশাসন। প্রস্তুত রাখা হয়েছে জেলার ২০৭টি সাইক্লোন সেল্টার।
সাগরে অবস্থানরত সব মাছধরা ট্রলার ও নৌকা সুন্দরবনে বিভিন্ন নদী ও খালে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. কামাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ট্রলারগুলোর বনের ভেতর নদী-খালে আশ্রয় নিয়েছে। বন বিভাগের কর্মীরা তাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে।
এদিকে, দুর্যোগ মোকাবেলায় বাতিল করা হয়েছে জেলার সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি। সুন্দরবনের অভ্যান্তরে বন রক্ষীদের সতর্ক অবস্থায় থাকতে বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) সকালে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বেলা সাড়ে ১১টায় সভা শেষে জেলা প্রশাসক মো. শফিকুল ইসলাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, সার্বক্ষণিক দুর্যোগ প্রস্তুতি মনিটরিংয়ের জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। মাইকিং করে উপকূলীয় উপজেলা শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, রামপাল ও মংলার জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হচ্ছে। প্রতিটি উপজেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে মেডিকেল টিম ও স্বেচ্ছা সেবকদের।
এছাড়া উপজেলা প্রশাসনের সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে তাদের কর্মস্থলে থাকতে বলা হয়েছে।
জরুরি সভায় রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিব কুমার রায় বলেন, এখনো রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া থাকায় কেউ আশ্রয় কেন্দ্রে আসতে চাইছে না। তবে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে সর্তক অবস্থায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের দিকে আরো অগ্রসর হলে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার সবাইকে সরিয়ে নেওয়া হবে বলে মংলা, শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ ও রামপালের ইউএনও’রা সভায় অবহিত করেন।
এসময় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সব সরকারি-বেসরকারি দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় কোমেন’র কারণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলে ৭ নম্বর এবং মংলা ও পায়রা বন্দরসহ উপকূলে আবহাওয়া দফতরের জারি করা পাঁচ নম্বর বিপদ সংকেত বহাল রয়েছে।
পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও টধলার এবং সমুদধগামী জাহাজসমূহকে পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
রাতে ভারি বর্ষণ হলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে না বাগেরহাটে। তবে দুপুর পর্যন্ত জেলায় কখনো রোদেলা আবার কখনো মেঘাচ্ছন্ন গুমোট আবহাওয় বিরাজ করছিল।