উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমী লঘুচাপের কারণে মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে।
বুধবার (০৮ জুলাই) রাত পর্যন্ত ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে জেলার নিম্নাঞ্চল। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
তলিয়ে গেছে বাগেরহাট পৌর শহরসহ জেলা সদরের অধিকাংশ রাস্তাঘাট। বৃষ্টির পানি সরতে না পারায় কোথায় কোথায় হাটু পানি অবস্থা। পুকুর, মাছের ঘের থেকে শুরু করে তলিয়ে গেছে বসতঘরও।
দিন ভর শহরের বিভিন্নস্থানে সড়কের উপর চোখে পড়েছে জাল দিয়ে মাছ ধরার চিত্র।
বাগেরহাট শহরের দোকানপাট এবং সড়ক ছাড়াও প্লাবিত হয়েছে, খারদ্বার, বাসাবাটি, কৃষ্ণনগর, মুনিগঞ্জ, হড়িখালী, নাগেরবাজার, পুরাতন বাজার, গোবরদিয়া, খানজাহান পল্লী ও সোনাতলা।
এছাড়া সদর উপজেলার রহিমাবদ, মরগা, বাগমরা, চাপাতলা, যাত্রপুর, বারইপাড়া, হালিশহর, রাখালগাছি, খানপুর, সুগন্ধি, বেমরতা, খালিশপুর, ফকিরহাটের বেতাগা, মাসকাটা, নিকলিপুর, পুটিয়া, গুড়গুড়িয়া, গেয়ালবাড়িসহ রামপাল, মংলা, কচুয়া, মোল্লাহাট, চিতলমারী, মোড়েলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলার অধিকাংশ এলাকার নিম্না অঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
বাগেরহাট শহরের রিকশা চালক মোফাজ্জেল হোসেন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, রাত থেকে ভারী বর্ষণে শহরের রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। রিকশা চালাতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। তারপরও জীবিকার তাগিদে রাস্তায় বের হয়েছেন তিনি।
পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। নিম্নাঞ্চলের বড়িঘর তলিয়ে সাধারণ মানুষের রান্নাসহ প্রয়োজনীয় কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করছে।
পানিবন্দি মানুষদের পৌর কাউন্সিলর সরদার লিয়াকত আলী চিড়া গুড় বিতরণ করেছেন। তিনি জানান, শহরের বিভিন্ন এলাকায় মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
অতিরিক্ত বর্ষণ ও শহরে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সাধারণ মানুষের এমন ভোগান্তি হচ্ছে।
শহরে পর্যাপ্ত ড্রেন না থাকা ও প্রভাবশালীরা সরকারি খালগুলো দখল করায় শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে ভুক্তভোগিরা জানিয়েছেন।
পানি নিষ্কাশনে পৌরসভার কর্মীদের নিয়ে সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে কাজের তদারকি করেছেন পৌর মেয়র খান হাবিবুর রহমানও। তবে বেশির ভাগ খালগুলো ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়াতে এবং ড্রেন গুলো দিয়ে পানি সরতে না পারাতে জলাবদ্ধতা থেকে দূর্ভোগ কমেনি পৌরবাসীর
** সাগর উত্তাল, মংলা বন্দরে ৩ নম্বর সর্তকতা সংকেত, মংলায় পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ
এদিকে, লঘুচাপের কারণে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। মংলা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পায়রা সমুদ্র বন্দর সমূহকে ০৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৈরি আবহাওয়ার করণে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া শত শত ট্রলার আশ্রয় নিয়েছে সুন্দরবনসহ উপকূলীয় বিভিন্ন নদী ও খালে।