টানা ভারী বৃষ্টিপাতে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের নিম্নাঞ্চলে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার অধিকাংশ নিচু এলাকা। ফলে, জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
রোববার (২৮ জুন) মংলা থেকে আমাদের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট আবু হোসাইন সুমন জানান, একটানা ভারী বৃষ্টিপাতে মংলাসহ আশপাশের উপকূলীয় এলাকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে শহর ও শহরতলীর নিম্নাঞ্চল।
বৃষ্টির করণে এক সপ্তাহ ধরে ব্যাহত হচ্ছে মংলা বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম। পোর্ট পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড এবং উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা।
বৃষ্টির পানি জমে রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ী সর্বত্র তলিয়ে গেছে। ফলে, চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পানি বন্দী এখানকার সাধারন মানুষ।
এদিকে, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছে হতদরিদ্র লোকজন। কর্মক্ষেত্রে যেতে না পারায় তাদের ত্রাণ সহায়তা প্রদাণের জন্য রবিবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: নাহিদুজ্জামান।
এছাড়া দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে গত এক সপ্তাহ ধরে মংলা বন্দরে অবস্থানরত সকল দেশী-বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খাসাল ও পরিবহণ কাজ মারাত্মাকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) কাজী গোলাম মোক্তাদের বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে জাহাজে পণ্য বোঝাই ও খালাস কাজ বন্ধ রাখতে হয়েছে।
প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সাগর ও উপকূলীয় নদ-নদীগুলো উত্তাল রয়েছে। ফলে (মাদার ভ্যাসেল থেকে) পণ্য খালাসের জন্য ব্যবহৃত লাইটারেজ জাহাজ চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে।
মংলা উপজেলা চেয়ারম্যান আবু তাহের হাওলাদার বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি স্থানীয় নদী-খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলা বিভিন্ন এলাকার প্রায় শতাধিক চিংড়ি ঘের তলিয়ে গেছে। এতে বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে চিংড়ি চাষিরা।
একই অবস্থা জেলা শহরেও। টানা বৃষ্টিতে বাগেরহাট পৌর শহরসহ সদর উপজেলার কাড়াপাড়া, ষাটগম্বুজ, ডেমা, রাধাবল্লব, কাশিমপুর, বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন গোবরদিয়া গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
রোববারের ভারী বৃষ্টিতে তলীয়ে যায় শহরের সাধণার মোড়, বিসমিল্লা মার্কেট, খারদ্বার, মুনিগঞ্জসহ বেশ কিছু এলাকার রাস্তাঘাট।
গোবরদিয়া এলাকার মাসুম হাওলাদার বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, একটানা বৃষ্টির পানিতে রাস্তায় হাঁটু পানির কারণে আমাদের এলাকার জনসাধারণের চলাচলে খুব সমস্যা হচ্ছে। শিশুদের দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ। এভাবে বৃষ্টি হতে থাকলে ঘরে পানি উঠতে বেশি সময় লাগবে না।
কাড়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ বশিরুল ইসলাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, কাড়াপাড়া ইউনিয়নের কিছু এলাকায় বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।
কিছু স্বার্থান্বেষী মহল গরবদিয়া এলাকার একমাত্র প্রবাহিত খালটি ভরাট করার কারণে বৃষ্টিতে ওই এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।
এছাড়া জেলার শরণখোলা, মোরেলগঞ্জ, রামপাল, ফকিরহাট, মোল্লারহাট, চিতলমারী ও কচুয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত ও জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।