বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দু’টি দ্বিতল ভবন ঝুকিঁপূর্ণ হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও সরঞ্জাম সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
গত প্রায় এক সপ্তাহের ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে এ ভবন দু’টির অধিকাংশ কক্ষের ছাদের আস্তরণ খসে পড়ছে এবং ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে আসবাবপত্র ভিজতে শুরু করেছে। শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসন এ ভবনের কক্ষগুলোর দাফতরিক গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম সরিয়ে নিতে শুরু করেন।
এদিকে গণপূর্ত বিভাগের পরামর্শে জেলা প্রশাসন অধিক ঝুঁকিপূর্ণ ২/১টি কক্ষে বল্লি (গাছ) দিয়ে ঠেস দিয়েছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছে জেলা প্রশাসন।
এদিন দুপুরে ওই ভবনে গিয়ে এসব চিত্র দেখা গেছে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) কার্যালয়সহ জেলা কালেক্টরেট ভবনের অধিকাংশ কক্ষ ব্যবহার অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। গত এক সপ্তাহ ধরে ভারী বর্ষণে দ্বিতীয় তলায় ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে বিভিন্ন দফতরের জিনিসপত্র নষ্ট হচ্ছে। অনেক স্থানে ছাদের আস্তরণ খসে পড়েছে। পিলার গুলোতে দেখা দিয়েছে ফাটল।
এ অবস্থায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয় ও আদালত এবং রাজস্ব শাখা, জুডিশিয়াল মুন্সি খানাসহ অধিকাংশ দফতরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের অফিস ব্যবহার্য জিনিসপত্র ভিজে গেছে। ফলে তাদের পক্ষে সেখানে কার্যক্রম পরিচালনা করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (২৬ জুন) দুপুরের দিকে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো: জাহাংগীর আলম কালেক্টরেট ভবনের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখে অফিসের দাফতরিক কাগজপত্র ও আসবাবপত্র যেন নষ্ট না হয় সেজন্য কর্মচারীদের জরুরি ভিত্তিতে তা সরিয়ে নিতে বলেন। এরপর থেকে কর্মচারীরা অফিসের জিনিসপত্র সরাতে শরু করেন।
১৯৯৬ সালের ২৭ জানুয়ারি বাগেরহাট জেলা কালেক্টরেট ভবন উদ্বোধন করা হয়। তারপর থেকেই জেলা প্রশাসনের যাবতীয় কার্যক্রম চলছে এ ভবনে। দীর্ঘ দিনে বড় কোনো সংস্কার হয়নি এ ভবনগুলোতে। এ অবস্থায় কয়েক মাস আগে বিভিন্ন স্থানের ফাটল ও ছাদের আস্তরণ খুলে পড়ায় তা জরুরিভাবে মেরামত করা হয়। তবে তা যথেষ্ট ছিল না।
এ অবস্থায় অনেকটা বাধ্য হয়েই ক্ষতিগ্রস্থ ওই কক্ষগুলোতে প্রশাসনিক কাজ চালিয়ে আসছিলেন কর্মকর্তারা। তবে গত ১ সপ্তাহের বৃষ্টিতে কালেক্টরেট ভবনের দুটি দ্বিতল ভবনের ছাদ চুইয়ে বিভিন্ন কক্ষে পানি পড়তে শুরু করে।
জেলা প্রশাসক মো. জাহাংগীর আলম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, কয়েক মাস আগে ভবনের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্থ স্থান মেরামতের জন্য ৩২ লাখ টাকা চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ভবনের যে অবস্থা তাতে এখন এ দুটি দ্বিতল ভবনের পুরো ছাদ ফেলে দিয়ে নতুনভাবে ছাদ করার ইস্টিমেট প্রস্তত করে আগামীকাল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হবে।
দুপুরে ঘটনাস্থলে আসা বাগেরহাট গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রোকনউদ্দিন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ভারী বর্ষণে এই ভবনের যে ভয়াবহতা দেখা দিয়েছে তাতে উপরের ছাদ ফেলে নতুন ছাদ করা ছাড়া বিকল্প কোনো কিছুই করা ঠিক হবে না।
তিনি বলেন, এ ভবন নির্মাণের সময়ে লোকাল সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছিলো বলে আমার কাছে প্রতিয়মান হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার লবণাক্ততার কথাটি ভেবে দেখা হয়নি। ফলে ভবনের অনেক স্থানে ফেটে যাওয়াসহ আস্তরণ খসে পড়ছে। এর জন্য লবণাক্ততা প্রধান কারণ।
বর্তমানে ভবন ব্যবহার করতে হলে ছাদ ফেলে দেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে জানান তিনি।