প্রচ্ছদ / খবর / পরকীয়ার জেরে খুন, স্ত্রীর স্বীকারোক্তিতে লাশ উদ্ধার

পরকীয়ার জেরে খুন, স্ত্রীর স্বীকারোক্তিতে লাশ উদ্ধার

Bagerhat-Pic-1(18-06-2015)স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে খুন হবার তিন মাস পর বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

বুধবার (১৭ জুন) দিবাগত রাতে স্ত্রী ফাতেমা বেগমের  স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তাদের ঘরের পাশের কাঁচা গোসল খানার নিচে মাটির চাপা দেওয়া আল-আমীন শেখ ওরফে আলম সাধুর (৫৫) লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় ফাতেমা বেগমকে (৪০) আটক করেছে পুলিশ। আলামত হিসেবে জব্দ করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহার করা গুপ্তি (ধারালো ছুরি) ও আলামিনের পরিদেহ রক্তমাখা ছেড়া লুঙ্গি।

নিহত আল-আমীন শেখ মোরেলগঞ্জ উপজেলার পঞ্চকরন ইউনিয়নের দক্ষিণ কুমারিয়াজোলা গ্রামের বাসিন্দা। গত তিন মাস ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

এদিকে, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চার সন্তানের জননী আল-আমিনের স্ত্রী ফাতেমা পরকীয়ার জেরে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

নিহতের সন্তান ও ভগ্নিপতির অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িতে অভিযানে যায় পুলিশ।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৮ জুন) সকালে নিহতের স্ত্রী ফাতেমা বেগম ও তার পরকীয়া প্রেমিক প্রতিবেশী শাহাজান শেখকে (৫০) আসামি করে ভগ্নিপতি মো. মোবারক বাদী হয়ে মোরেলগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, পেশায় রিকশাচালক আল-আমিন শেখ জীবিকার প্রয়োজনে ঢাকায় থাকতেন। ১৬ মার্চ রাতে তিনি ঢাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশে বের হয়ে নিখোঁজ হন।

এ বিষয়ে নিহতের ছেলে মোহাম্মদ আলী তার বাবা নিখোঁজের খবর জানিয়ে ঢাকার কেরানিগঞ্জ থানায় গত ২রা এপ্রিল একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

নিখোঁজ আল-আমীনের মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে জানা যায়, সবশেষ ১৬ মার্চ তিনি মোরেলগঞ্জের ফুলহাতা টাওয়ারের অন্তর্গত কোন এলাকা থেকে কথা বলেছেন। সেই সূত্র ধরে আল-আমীনের ভগ্নিপতি মোবারক দু’দিন আগে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে যান। তখন আল-আমীন বাড়ি এসেছিলো কি না, জানতে চাইলে তার স্ত্রী ফাতেমা উল্টা-পাল্টা উত্তর দিতে থাকেন।

তার কথাবার্তায় মোবারকের মনে সন্দেহের সৃষ্টি হলে তিনি মোরেলগঞ্জ থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান। পরে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে ওই বাড়িতে গিয়ে আল-আমীনের স্ত্রী ফাতেমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

ওসি আরো জানান, জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে পুলিশের কাছে ফাতেমা হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাড়ির রান্না ঘরের পাশের ইট বিছানো ঘোসল খানার মাটি খুঁড়ে আল-আমীন শেখের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

ফাতেমা বেগমের বরাত দিয়ে ওসি জানান, তার স্বামী আল-আমীন শেখ ১৬ মার্চ ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন। ওই রাতেই ঝগড়াঝাটির একপর্যায়ে ধারালো দেশি (গুপ্তি) অস্ত্র দিয়ে তিনি তার স্বামীর বুকে আঘাত করেন। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি মারা যান।

পরে প্রেমিক প্রতিবেশী শাহাজান শেখের (৫০) সহযোগিতায় মৃতদেহ গোসল খানায় মাটি চাপা দিয়ে রাখেন। এ হত্যার ঘটনা যাতে কারো নজরে না আসে সে জন্য ওই গোসলখানায়ই নিয়মিত গোসল করতেন ফাতেমা বেগম।

আটকের পর ফাতেমা বেগম স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আটক ফাতেমা বেগমকে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাগেরহাট আদালতে এবং উদ্ধারকৃত মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

আদালতে ফাতেমা স্বামীকে হত্যা ও মৃতদেহ গুম চেষ্টার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে পারেন বলে ওসি জানিয়েছেন।

১৮ জুন ২০১৫ :: স্টাফ ও স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট,
বাগেরহাট ইনফো ডটকম।।
বাপ্পা/এসআই/এনআরএ/বিআই

About বাগেরহাট ইনফো নিউজ