সুন্দরবনের কুখ্যাত বনদস্যু জিহাদ বাহিনীর ১০ দস্যুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বাগেরহাটের একটি আদালত।
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) দুপুরে বাগেহাটের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের বিচারক মোহাঃ মহিদুজ্জামান এ রায় দেন।
রায়ে দন্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ১৮৭৮ সালের অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ (এ) ধারায় যাবজ্জীবন এবং ১৯ (এফ) ধারায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন। দুইটি দন্ডই একই সাথে কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেন আদালত।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- বাগেরহাট সদর উপজেলার পিসি ডেমা গ্রামের এখলাস আলী শেখের ছেলে ওমর ফারুখ ওরফে মাস্টার, রামপাল উপজেলার কালিকা প্রসাদ নগরের নূর মোহাম্মদের ছেলে আলী, প্রসাদ নগরের নূর মোহাম্মদের ছেলে ওলি, শৈলাতখালি এলাকার বড় দূর্গাপুর গ্রামের ইজার উদ্দিন শেখের ছেলে জাহাঙ্গির, দক্ষিণ সন্নাসী গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে রফিক, খুলনার টিভি ক্রসরোডের নুরুল ইসলামের ছেলে কামরুল ইসলাম।
বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার ছোট আমখোলা এলাকার আব্দুল লতিফ সিকদারের ছেলে মতি সিকদার ওরফে মতি ওরফে মাইন, একাই জেলার পাথরঘাটা উপজেলার দক্ষিণ চরদুয়ানি গ্রামের আব্দুল রহমান মুক্তার ছেলে রিপন মুক্তার, চরদুয়ানি গ্রামের আলী হোসেন মুক্তারের ছেলে আব্দুল বারেক মুক্তার, তালতলী উপজেলার নিদ্রাচর এলাকার চান মিয়া আকনের ছেলে আব্দুল রসিদ আকন ওরফে কালা মাঝি।
রায় ঘোষণার সময় ওমর ফারুখ, মতি সিকদার ও আব্দুল রসিদ আকন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকী ৭ আসামি পলাতক রয়েছে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিররণী থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালে ২৮ জানুয়ারি ভোরে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সুপতি স্টেশনের বলেশ্বর নদীর পশ্চিম পাড় থেকে বিপুল পরিমাণের অস্ত্র ও গেলাবারুদসহ বনদস্যু জিহাদসহ ওই বাহিনীর ৫ সদস্যকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এ ঘটনায় ডিবির তৎকালীন উপ পরিদশক (এসআই) শেখ আবু বক্কর বাদী হয়ে ওই দিন বিকেলে বাগেরহাটের শরণখোলা থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
একই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এসআই ইমান উদ্দিন বনদস্যু জিহাদসহ তার বাহিনীর ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
এদের মধ্যে বিচার চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে বাহিনী প্রধান জিহাদ নিহত হয়। ফলে নিয়মানুযায়ী মামলার কার্যক্রম থেকে তাকে অব্যাহতি দেয় আদালত।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন বাগেরহাটের অতিরুক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) এ্যাডভোকেট কাজি মনোয়ার হোসেন এবং আসামি পক্ষে এ্যাডভোকেট মো. আলী আকবর।