সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার একটি গ্রাম থেকে বাঘের মাথার খুলি, দেড়শতাধিক হাড়গোড় ও শিকারের ফাঁদ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ।
এ সময় বনবিভাগের ‘তালিকাভুক্ত এক চোরা শিকারি’কেও আটক করা হয়।
মঙ্গলবার (১২ মে) সকালে উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের উত্তর সোনাতলা গ্রামে ছগীর ঘরামির বাড়ি থেকে এসব উদ্ধার করা হয়।
আটক ছগীর ঘরামি (৪০) একই গ্রামের মৃত ইউসুফ ঘরামির ছেলে। বনবিভাগের বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচারকারীদের তালিকায় তার নাম রয়েছে।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) কামাল উদ্দিন আহমেদ বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে অভিযান চালিয়ে ‘তালিকাভুক্ত চোরা শিকারি ও পাচারকারী’ ছগীর ঘরামিকে আটক করা হয়।
পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার ঘরে ও পুকুরে লুকিয়ে রাখা রয়েল বেঙ্গল টাইগারের (বাঘের) মাথার খুলি, চোয়াল ও মেরুদণ্ডসহ ১৫৭টি হাড়গোড় এবং ১৫ কেজি হরিণ ও বাঘ শিকারে ব্যবহৃত নাইলনের দড়ির ফাঁদ উদ্ধার করা হয়।
চোরা শিকারি চক্রটি ছয় সাত মাস আগে বাঘটিকে হত্যা করে চামড়া বিক্রি করে দেহাবশেষ বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আমীর হোসাইন চৌধুরী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, আটক ছগীর সরাসরি সুন্দরবন থেকে বাঘসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচারের সঙ্গে জড়িত। তার বিরুদ্ধে শিকার ও পাচারের অভিযোগে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে আগের মামলা রয়েছে। দীর্ঘ্যদিন ধরে তাকে আটকের চেষ্টা চলছিল।
ছগীরের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে অন্তত তিনটি মামলা রয়েছে। এঘটনায় আরো একটি মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে গত ৪ মার্চ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার পুঁটিখালী এলাকা থেকে বনবিভাগ জেলা পুলিশের সহায়তায় পাঁচটি হরিণ ও একটি গন্ধগোকুলের (বাঘ প্রজাতির) চামড়াসহ এক পাচারকারীকে আটক করে। তারও প্রায় দেড় মাস আগে ১৩ জানুয়ারি র্যাব-৮ শরণখোলা থেকে বাঘের একটি চামড়া ও বেশ কিছু হাড়সহ তিনজকে আটক করে।
সে সময় আটক হয় জেলার শরনখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রামের দুই সহোদর দেলোয়ার শেখ (৩৪) ও নূরুজ্জামান শেখ (৫২) এবং একই উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামের কবির হাওলাদার (৪০)। মঙ্গলবার আটক ছগীর চোরাকারবারী দলের সক্রিয় সদস্য এবং ইতিপূর্বে আটক আন্তর্জাতিক চোরাকারবারী নূরুজ্জামান শেখের ভাই।