বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার একটি সার্বজনীন কালি মন্দির ভাংচুর করে জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (০১ মে) ভোরে উপজেলার চিংড়াখালী ইউনিয়নের পূর্ব চন্ডিপুর গ্রামের মন্ডলপাড়া সার্বজনীন কালি মন্দিরে এ ঘটনা ঘটে।
বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ জানিয়েছে, মন্দিরের ওই জমি নিয়ে কমিটির সঙ্গে গত ৩ বছর ধরে নাসির নামে এক ব্যক্তির বিরোধ চলে আসছে। ভোরে সে ওই জানগায় বাঁশ ও টিন দিয়ে ঘর তৈরি শুরু করেন।
পূর্ব চন্ডিপুর গ্রামের ‘মন্ডলপাড়া সার্বজনীন কালি মন্দির’ কমিটির সভাপতি মনি লাল মন্ডল বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, পাঁচ বছর আগে অতুল, অমূল্য, প্রফুল্ল ও ভূবন মন্ডলরা (চার ভাই) ভারতে চলে যাওয়ার আগে ২৫ শতক জমি দান করেন। ওই দান করা জমিতে গ্রামবাসীকে নিয়ে একটি সার্বজনীন কালি মন্দির স্থাপন করা হয়।
‘তখন থেকে গ্রামবাসী মিলে এখানে পূজা অর্চনা করে আসছি। গত মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) রাতে আমরা ওই মন্দিরের সর্বশেষ কালি পূজা করেছি।’
কিন্তু ২০১১ সালে মলিনা মন্ডল নামে এক নারী ওই জমি নিজের নামে দাবি করে (এই) গ্রামের খান নাসির উদ্দিনের কাছে বিক্রি করে দেন বলে অভিযোগ তার।
তিনি বলেন, নাসির উদ্দিন জমির মালিক দাবি করে শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে লোকজন নিয়ে এসে আমাদের খড় ও বাঁশ দিয়ে তৈরী মন্দির ভেঙ্গে ফেলে। মন্দিরে থাকা কালি প্রতিমা অন্যত্র সরিয়ে ফেলে সেখানে তিনি বাঁশের খুঁটি ও টিন দিয়ে স্থাপনা তৈরী করছেন।
সকালে মন্দিরের জায়গা দখল করে ঘর তৈরী বিষয়টি পুলিশকে জানান হয়েছে উল্লেখ করে তিনি মন্দিরের জমি দখলমুক্ত করে দিতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এদিকে, বিরোধপূর্ণ জমিতে ঘর তোলার কথা স্বীকার করে খান নাসির উদ্দিন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, অতুল, অমূল্য, প্রফুল্ল ও ভূবন মন্ডলদের শরীক (অংশিদার) মলিনা মন্ডল ২০১১ সালে আমার কাছে জমি বিক্রি করেন। আমার কাছে জমির দলিল রয়েছে।
তিনি দাবী করেন, মলিনার অন্য শরীক মনি লাল মন্ডল (মন্দির কমিটির সভাপতি) আমাকে ওই জমি থেকে বঞ্চিত করতে রাতারাতি খড় ও বাঁশ দিয়ে একটি অস্থায়ী স্থাপনা তৈরী করেছেন। সেখানে সম্প্রতি কালিপূজাও করা হয়েছে।
‘এখানে কোন সার্বজনীন কালি মন্দির না’, বলে মন্তব্য করে নাসির বলেন, আমার জমি বুঝে না দিতে মনিলাল নানা গল্প সাজাচ্ছেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে মোরেলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) তারক বিশ্বাস বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, নাসির উদ্দিন ২০১১ সালে মলিনা মন্ডল নামে এক নারীর কাছ থেকে ২৫ শতক জমি ক্রয় করেন। মন্দিরের ওই জমি নিয়ে কমিটির সঙ্গে খান নাসির উদ্দিনের গত তিন বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে।
শুক্রবার ভোরে মন্দিরের জায়গায় নাসির ও তার লোকজন বাঁশ ও টিন দিয়ে একটি ঘর তৈরী করছিলেন। খবর পেয়ে বিকেলে পুলিশ সেখানে গেলে তাদের পাওয়া যায় নি।
উভয়পক্ষের জমির কাগজপত্র দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।