বাগেরহাটে বৈশাখি মেলার মাঠে খুন হওয়া বেকারী শ্রমিক সোহেল হাওলাদারকে পেটের নীচে ছুরিকাঘাত করেছিলো ইয়াছিন (২২) নামে এক যুবক।
রোববার বাগেরহাট আদালতে সে এই হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বেচ্ছায় জবানবন্দি দিয়েছে।
এর আগে শনিবার বিকেলে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে দাবি করে যে, সোহেলের কাছে তার পাওনা দুই শত টাকা চাওয়া নিয়ে তর্ক তির্কের এক পর্যায়ে সে তার কাছে থাকা ছুরি দিয়ে সোহেলকে আঘাত করেছিলো। ইয়াসিন তার সাথে থাকা সহযোগীদের নামও প্রকাশ করেছে।
রোববার বিকেলে বাগেরহাটের অতিরিক্ত মূখ্য বিচারিক হাকিম মো. রেজওয়ানুর রহমান ইয়াছিনের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। তবে জবানবন্দিতে ইয়াসিন আরও কী কী বলেছে তা বিস্তারিত জানা যায়নি।
সোমবার শহরের শালতলা এলাকায় বাগেরহাট জেলা প্রশাসন আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী এই বৈশাখী মেলা শেষ হবার কথা।
মুঠোফোন (মোবাইল) ট্র্যাকিং করে বাগেরহাট পুলিশ শনিবার বিকেলে বাগেরহাট শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইয়াসিনসহ তিন হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করে।
এরা হলেন, বাগেরহাট শহরের নাগেরবাজার এলাকার আব্দুল গফুরের ছেলে ইয়াছিন (২২), একই এলাকার আব্দুল ওয়াহাবের ছেলে সাকিল (২১) এবং হাড়িখালী বটতলা এলাকার গণি ব্যাপারীর ছেলে আকাশ ব্যাপারী (২১)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বাগেরহাট মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো: ইমান আলী সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদককে বলেন, আটককৃতরা সবাই প্রতক্ষ্যভাবে ঐ হত্যাকা-ের সাথে জড়িত এবং এই ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুল আজিজ হাওলাদারের দায়ের করা হত্যা মামলার এজাহার নামীয় আসামী।
নিহতের বড় ভাই সোহাগ হাওলাদার ইয়াছিনের বক্তব্যের সাথে দ্বিমত প্রকাশ করে বলেন, ‘শহরের খাঁরদ্বার এলাকার রবি নামে এক যুবক ওদের অন্যতম সহযোগী। প্রেমজনিত একটি ঘটনা নিয়ে আমার সাথে রবির বিরোধ ছিলো। এই বিরোধের জের ধরে বিভিন্ন সময়ে তারা আমাকে ও আমার ভাইকে মারার চেষ্টা করেছে। শুক্রবার রাতে মেলার মাঠে একা পেয়ে রবি, ইয়াসিনসহ অন্যরা পরিকল্পিতভাবে সোহেলকে হত্যা করে।’
এদিকে শুক্রবার রাতের ঐ ঘটনার পর মেলার প্রতি মানুষের আগ্রহ আতংকে রূপ নিয়েছে। শনিবার রাতে এবং রোববার বিকেলে সরেজমিন মেলার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে দর্শক আনাগোনা খুবই কম।
অন্যান্য বছর এ সময় মেলার মাঠ জমজমাট থাকে জানিয়ে বাবলা বসু নামে এক স্টল গ্রহিতা বলেন, ‘এমনিতেই এবার মাঠে বখাটেদের আনাগোনার কারণে মানুষ বিভিন্নভাবে হয়রানী হয়েছে। তার উপরে শুক্রবার রাতে খুনের ঘটনায় মেলায় মহিলা ও শিশুদের আগমণ একেবারেই কমে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দর্শক ক্রেতার চাপ থাকলে আমরা মেলার সময় বাড়ানোর দাবি করতে পারতাম কিন্তু এখন সে কথাই বা কি ভাবে বলি?’
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক ও এই মেলা উদযাপন কমিটির সভাপতি মো. জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন, মেলা নির্ধারিত সময়েই শেষ হবে। সময় বাড়ানো হবে না।’