চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে নকল ঠেকাতে না পেরে পদত্যাক করেছেন ওই কেন্দ্র সচিব।
শরণখোলা ডিগ্রী কলেজের যুক্তিবিদ্যা বিভাগের সিনিয়র সহকারী অধ্যাপক এবং এইচএসসি’তে ২০১৫ সালে ওই পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান পরীক্ষায় নকলের মহোৎসব চলছে এমন অভিযোগ করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) ইংরেজী ১ম পত্রের পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের প্রকাশ্যে নকল করার পাশাপাশি কয়েকজন শিক্ষকের মাধ্যমে বিভিন্ন কক্ষে নকল পৌছে দেয়ার দৃশ্য দেখা যায়। এসময় শারিরিক অসুস্থতা দেখিয়ে তাৎক্ষনিক কলেজ অধ্যক্ষের কাছে কেন্দ্র সচিবের পদ থেকে লিখিত ভাবে পদত্যাগ করেন।
রবিবার বিষয়টি প্রকাশ হয়ে পড়লে শুরু হয় তোলপাড়।
পহেলা এপ্রিল থেকে সারা দেশে শুরু হওয়া এইচএসসি পরীক্ষায় শরণখোলা উপজেলার মাতৃভাষা কলেজ, তাফালবাড়ী স্কুল এন্ড কলেজ ও শরণখোলা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সিট পড়ে শরণখোলা ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্র। ওই ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জেনারেল ও কারিগরি বোর্ড শাখার মোট ৮১৬ জন শিক্ষার্থী চলতি বছরে এই কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েক জন শিক্ষক জানান, প্রথম দিন থেকে টুকিটাকি নকল হলেও ৯ এপ্রিল ইংরেজী ১ম পত্র পরীক্ষার দিন কতিপয় শিক্ষক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর টাকার বিনিময় কক্ষে কক্ষে শিক্ষার্থীদের কাছে পৌছে দেয়। কোন কোন শিক্ষক আবার মুল বই কক্ষে পৌঁছে দেয়।
দলবাজ শিক্ষকদের নকলে সহয়তার এমন ভয়াবহতা দেখে অন্য শিক্ষকদের অনেকেই প্রতিবাদ করতে সাহস পায়নি। বিষয়টির প্রতিবাদে কেন্দ্র সচিব ওই দিনই পদত্যাগ করেন।
শরণখোলা ডিগ্রী কলেজের এক জন সিনিয়র শিক্ষক বলেন, কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত কখনই তারা নকলের এমন ভয়াবহ চিত্র দেখেননি।
তবে বিষয়টি কলেজের অন্য এক শিক্ষক স্বীকার করে বলেন, পরীক্ষায় পাশের হার বাড়াতে শিক্ষার্থীদের সামান্য সুযোগ দেয়া হয়েছে।
সিনিয়র সহকারী অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে তার পক্ষে কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়।
তবে এবিষয়ে জানতে চাওয়া হলে, ‘আমি সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্য দিতে বাধ্য নই’ বলে ফোন কেটে দেন শরণখোলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো. নুরুল আলম ফকির।
এব্যাপারে শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহম্মদ অতুল মন্ডল জানান, পরীক্ষায় নকলের অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। তবে কেন্দ্র সচিবের পদত্যাগের বিষয়টি তারা জানা নেই।
খোঁজখবর নিয়ে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশাবাদ জানান তিনি।
এমন গুরুত্বর না হলেও পরীক্ষা কেন্দে মোবাইল ফোন ব্যবহার, ফোনে এসএমএস ও ইন্টারনেটসহ বেশ কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করে নকলের অভিযোগ পাওয়া গছেছে জেলা ও উপজেলা শহরের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে।