বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামে এক গৃহবধুকে যৌতুকের দাবিতে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ গুম করার চেষ্টা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে স্বামীর বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে পুলিশ গৃহবধু রেক্সোনা বেগমের (২৮) গলায় ইট বাঁধা লাশ উদ্ধার করেছে।
এঘটনায় তার শাশুড়ি ফরিদা বেগমকে (৬৫) আটক করা হয়েছে। তবে, স্বামী আরিফ মল্লিক ও শ্বশুর মল্লিক আকবর আলী ওরফে শান্ত পালিয়ে গেছেন।
নিহত রেক্সোনা ফকিরহাট উপজেলার নলধা-মৌভোগ ইউনিয়নের কামটা গ্রামের আব্দুর জব্বার শেখের মেয়ে। তার শুভা (৮) ও ইভা (৩) নামের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
হত্যার পর লাশ গুম চেষ্টার অভিযোগ নিহত গৃহবধুর শাশুড়ী ফরিদা বেগম (৫৪) কে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনেরা জানান, কামটা গ্রামের রেক্সোনা বেগমের সাথে প্রায় ১৫বছর আগে একই উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মল্লিক মুজিবুর রহমানের ছেলে আরিফ মল্লিকের বিয়ে হয়। বিয়ের পর কিছু দিন তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের হলেও পরে স্বামী আরিফ মল্লিকের যৌতুকের দাবিসহ পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের বিরোধ শুরু হয়।
এনিয়ে স্থানীয় ভাবে কয়েকদফা শালিষ বৈঠক করেও বিষয়টি মিমাংশা করা সম্ভাব হয়নি। সর্বশেষ গত মাসে যৌতুক হিসেবে আরিফ মল্লিককে নগদ ২০হাজার টাকা প্রদান করে রেক্সোনার পবিরবার।
রেক্সোনার ভাই মিজানুর রহমানের অভিযোগ ,তার ভগ্নিপতির বাড়ি থেকে জানানো হয় বুধবার সন্ধ্যা হতে রেক্সোনাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার মিজানুর রহমান বোনের খোঁজ নিতে বালিয়াডাঙ্গ গ্রামে ভগ্নিপতি আরিফ মল্লিকের বাড়িতে আসলে তার উপর রেক্সোনার শশুরবাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
এর পর রেক্সোনার বড় ভাই মিজানুর রহমান বৃহস্পপতিবার ভগ্নিপতি আরিফ মল্লিকসহ ৩/৪জনের নাম উল্লেখ করে ফকিরহাট থানায় একটি সাধারন ডাইরী করেন (যার নং ৬৮)।
ফকিরহাট মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) বিধান চন্দ্র রায় জানান, স্থানীয় এক ব্যক্তি আরিফের বাড়ির পাশের একটি ডোবার (পুকুর) পাড় দিয়ে যাওয়ার সময় পানিতে লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন।
পরে শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় লোকজন পুলিশের উপস্থিতিতে ডোবা হতে গৃহবধু রেক্সোনার লাশ উদ্ধার করেন।
এসআই বিধান আরো জানান, লাশটির গায়ে ইট বেঁধে ডুবিয়ে রাখা হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে ১/২ দিন আগে রেক্সানাকে হত্যা করে গলায় ইট বেঁধে পুকুরে ডুবিয়ে রাখা হয়েছিল।
থানার অফিসার ইনচাজ (ওসি) মোঃ আসিসুর রহমানের জানান, এ ঘটনায় ফকিরহাট মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের শাশুড়ি ফরিদা বেগমকে (৫৪) আটক করা হয়েছে।
তবে, এসময়ে স্বামী আরিফসহ অন্যরা বাড়ি ফেলে পালিয়ে গেছে।
পুলিশ লাশটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে প্রেরন করেছে, বলে জানান ওসি।