বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার লক্ষীখালী গ্রামে শুরু হওয়া গোপাল চাঁদ বারুণী স্নান ও মহামেলার প্রায় দুই লখ ভক্ত-পূর্ণার্থীর সমাগম হয়েছে।
মদন ত্রয়োদশী তিথি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (০২ এপ্রিল) ভোর থেকে শুরু করে দুপুর ১টা ২৬ মিনিট পর্যন্ত চলে স্নানোৎসব। ভক্তরা ইহজাগতিক পাপ মোচন ও পারামার্থিক কল্যান লাভের জন্য স্নানে অংশ নেয়।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, এবারের মেলায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ২ লাখ ভক্ত, পূর্ণার্থী ও দর্শনার্থীদের সমাগত হয়েছে। এদের মধ্যে তালিকাভূক্ত দলের সদস্য ১ লাখ নারী, পুরুষ ও শিশু ভক্ত বুধ ও বৃহস্পতিবার বারুণী স্নানে অংশ নিয়েছেন।
বাংলা ১৩২৮ সাল থেকে মরেলগঞ্জের লক্ষীখালী গ্রামে গোপাল সাধুর লীলাধামে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। যা এখন ‘গোপাল সাধুর’ মেলা নামেও পরিচিত। সেই ধারাবাহিকতায় শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ২০৪তম জন্ম স্মরণে এবারের বারুণী স্নান ও মহামেলার আয়োজন করা হয়।
ভ্রম্মচারী শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর বাংলা ১২১৮ সালে বৈশাখী পূণিমায় সোমবার গোপালগঞ্জের ওড়াকান্দিতে জন্ম গ্রহন করেন। ধর্মীয় মতাদর্শে হরিচাঁদ ঠাকুর ওড়কিান্দি থেকে বঙ্গভারত উপমহাদেশের শোসন নিস্পেশন বিরোধী ও গণমানুষের মুক্তির আন্দোলন শুরু করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন অঞ্চলে তার লাখ লাখ ভক্ত অনুসারী তৈরী হয়। যারা এখন মতুয়া সম্প্রদায় নামে পরিচিত।
মেলায় আসা পূর্ণার্থীরা বাগেরহাট ইনফোকে জানান, মতুয়া ভক্তরা প্রতি বছর মধুকৃষ্ণা পূর্ণিমার ত্রয়োদশী তিথিতে ওড়াকান্দিতে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মোৎসব পালন করেন। যা এখন বারুণী স্নান ও মহামেলা নামে পরিচিত।
বর্তমানে প্রায়ত গোপাল সাধুর ২৪ বিঘা জমি নিয়ে বসতবাড়িতে এ বসে। মেলা ও স্নান নিয়ন্ত্রনের জন্য পুলিশ, আনছার ভিডিপি ছাড়াও স্থানীয় ২শ’ জন স্বেচ্ছাসেবক নিযুক্ত করা হয়েছে।
লক্ষীখালী ধামের ৫ম গদিনশিন সেবাইত সাগর সাধু ঠাকুর বৃহস্পতিবার সন্ধায় বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, মতুয়া ভক্তরা প্রতি বছর মধুকৃষ্ণা পূর্ণিমার ত্রয়োদশী তিথিতে ওড়াকান্দিতে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মোৎসবে বারুণী স্নানে অংশ নেয়।
ওড়াকান্দির ১৫দিন পরে ঠাকুরের দোয়ালীয়া বাড়ি গোপাল চাঁদের লীলা নিকেতন মোরেলগঞ্জের লক্ষীখালীতেও প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয় বারুণী স্ননা ও মহামেলা।
বারুণী মেলার দ্বিতীয় দিনে অংশ নেন একটিবাড়ি একটি খামার প্রকল্পের পরিচালক ড. শ্রী প্রশান্ত কুমার রায়, বাগেরহাট জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.হায়াতুল ইসলামসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতনরা।
মেলায় আগতদের নিরাপত্তা ও শৃংখলা রক্ষার জন্য পুলিশের একাধিক দল সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করছে বলে জানিয়েছেন মোরেলগঞ্জ থানা ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান।