চট্টগ্রাম থেকে মংলা বন্দরে আসা এন্টিগুয়া’র পতাকাবাহী একটি জাহাজের তালাবদ্ধ কন্টেইনারের ভেতরে থেকে এক যুবককে উদ্ধার করা হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া আবু তাহের নামে (২৬) চট্টগ্রামের আনোয়ারা এলাকার মো. সাবেরের ছেলে।
বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) দিবাগত রাত ৯টার দিকে ইলিন এস (ELLEN-S) নামের জাহাজের একটি কন্টেইনারের তালা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। পরে তাকে মংলা বন্দর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ধারণা করা হচ্ছে গত ৩-৪দিন ধনে সে এই কন্টিনারের ভিতরে আটকা অবস্থায় ছিলেন।
শুক্রবার (২৭ মার্চ) সকালে মংলা বন্দর হাসপাতালের চিকিৎসক প্রকাশ চন্দ্র মণ্ডল জানান, রাত ১০টা ২০ মিনিটের দিকে আবু তাহেরকে হাসাপাতালে আনা হয়। তখন তিনি অচেতন ছিলেন।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা কন্টেইনারবাহী একটি জাহাজ মংলা বন্দরে পৌঁছে। মংলা বন্দরে জাহাজটি পৌঁছার পর বন্দর শ্রমিকরা ওই জাহাজ থেকে কন্টেইনার নামানোর কাজ শুরু করে। এ সময় একটি কন্টেইনারে বাইরে থেকে শব্দ শুনতে পায় তারা।
বিষয়টি আমাকে জানালে কন্টেইনারের তালা ভেঙে ওই যুবককে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে দ্রুত বন্দর হাসপাতালে ভর্তি করি।
মংলা বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) গোলাম মোক্তাদির জানান, এই কনটেইনারের মুখ যখন আটকে দেওয়া হয় তখন ভেতরে আর আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে না। কনটেইনার আটকানোর আগে ভেতরে যতটুকু অক্সিজেন ছিল সেটুকু দিয়েই আবু তাহের বেঁচেছিলেন। ৪০ ফুট আয়তনের কনটেইনার হওয়ায় ভেতরে অক্সিজেনের পরিমাণ বেশি ছিল।
মংলা বন্দরে শ্রমিকেরা টের পাওয়াতে তাঁর জীবন রক্ষা হয়েছে। জাহাজটির সিঙ্গাপুর বন্দর পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল। আবু তাহেরকে মংলা থেকে উদ্ধার করা না গেলে তিনি আর বেঁচে থাকতে পারতেন না।
উদ্ধার হওয়া আবু তাহের বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় সে দিন তিনি কাজ করছিলেন। ওই অবস্থায় কনটেইনারে ঘুমিয়ে পড়ে থাকতে পারেন।
মংলা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মঞ্জুর এলাহী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে খবর পেয়ে হাসপাতালে আবু তাহেরকে দেখতে গিয়েছি। সে পুরোপুরি সুস্থ হলে জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত জানা যাবে।
মংলা বন্দর হাসপাতালের চিকিৎসকরা শুক্রবার সন্ধায় জানিয়েছেন, এখন সে অনেকটা ভালো। দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করেছেন। শারীরিকভাবে আশঙ্কামুক্ত হলেও মানসিকভাবে তিনি বিপর্যস্ত।
চিকিৎসক আবদুল হামিদ জানান, তাঁকে হেরোইন আসক্ত বলে মনে হয়েছে। তাঁর কাছে কিছু নেশার সামগ্রীও পাওয়া গিয়েছে।