৪৪ বছর আগের যে রাতে বাঙালিকে স্তব্ধ করে দিতে পাকিস্তানি বাহিনী হত্যাযজ্ঞে নেমেছিল, সেই ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে পালনের দাবিতে বাগেরহাটে আলোর মিছিল হয়েছে।
২৫ মার্চ শহীদদের স্মরণে বুধবার রাত পৌনে ৮ টায় মোমবাতি হাতে আলোর মিছিল করেছে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।
কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের পুরাতন কোর্ট চত্ত্বর থেকে মিছিলটি বের করা হয়। ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে পালনের দাবিতে এই আলোর মিছিলে অংশ নেয় শহরের নানা শ্রেণী পেশার মানুষ।
শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাগেরহাট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয় এই আলোর মিছিল। পরে তারা শহীদ মিনারে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
সমাবেশ থেকে বক্তারা বলেন, ২৫ মার্চের ওই রাতে ঢাকা শহরে ৫০ থেকে ৬০ হাজারের মতো ছাত্র, শিক্ষক, চিকিৎসকসহ সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্বাধিক হত্যাকাণ্ড।
“পৃথিবীর আর কোনো দেশে যাতে এ ধরনের নৃশংসতা না হয়, সেজন্য আমরা এর বিচার চাচ্ছি এবং এই রাতটিকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা (জেনোসাইড) দিবস হিসেবে স্বীকৃতি চাচ্ছি।”
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে বাঙালি নিধনে ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সৈন্যরা। শুরু হয় ‘অপারেশন সার্চ লাইট’। ঢাকায় পাকহানাদার বাহিনী নির্বিচারে হত্যা করে বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, সাংবাদিক, লেখক, ছাত্রসহ অসংখ্য মানুষকে। ২৫ মার্চকে আমরা ভয়াল কলোরাত্রি বলে আখ্যায়িত করে আসছি।
ভারত, জাপান, মোক্সিকোসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের জনগণ ২৫ মার্চকে ‘জেনোসাইড ডে’ পালনের দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইউনেস্কোসহ এধরনের আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর কাছে এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি চাওয়ার দাবি জানানোর আহ্বান জানান বক্তারা।
সমাবেশে বক্তব্য দেন- ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির বাগেরহাট জেলা শাখার আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট আমিরুল আলম মিলন, সদস্য সচিব ফররুফ হাসান জুয়েল, সদস্য তুষার কান্তি দাস, মহিলা পরিষদের সম্পাদক শিল্পী সমাদ্দার, বাগেরহাট সদর উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পারভীন আহমেদ, জেলা কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক আবুল হোসেন শিপন প্রমূখ।