বাগেরহাটের কচুয়ায় দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুত্বর আহত মুক্ত শেখ (৩৫) নামে এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
বুধবার (১৮ মার্চ) দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
মুক্ত শেখ বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার রাঢ়িপাড়া ইউনিয়নের চরকাঠি গ্রামের মৃত বন্দে আলী শেখের ছেলে।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, গত ১০ ফেব্রুয়ারী সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কচুয়া উপজেলা থেকে ৯-১০ জন ব্যক্তি মুক্তকে ধরে নিয়ে যায়। পরে রাঢ়িপাড়া ইউনিয়নের খলিসাখালী গ্রামের একটি সাইক্লোন শেল্টারের সামনে স্থানীয় দুর্বৃত্তরা লোহার রড ও লাঠিসোটা দিয়ে পিটিয়ে তার হাত-পা ভেঙ্গে দেয় এবং ৫ বোতল ফেনসিডিল দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
আশংকাজনক অবস্থায় পুলিশ ওই দিনই মুক্ত নামে ওই ব্যক্তিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পুলিশী প্রহরায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার দুপুর দেড়টায় তাঁর মৃত্যু হয়।
তবে, কচুয়া থানা পুলিশের দাবি নিহত মুক্ত শেখ একজন সন্ত্রসী। স্থানীয়রা তাকে মাদকসহ ধরে গনপিটুনী দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে।
মুক্ত শেখের স্ত্রী নাসরিন বেগম বুধবার দুপুরে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে অভিযোগ করে বলেন, পূর্ব বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে তার স্বামীকে অমানুষিক নির্যাতন করার ফলে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
তিনি দাবি করেন, তার স্বামী মুক্ত শেখ স্থানীয়ভাবে মনেপ্রাণে বিএনপি’র সমর্থক ছিলেন। দল দীর্ঘদিন ক্ষমতায় না থাকার কারনে সরকার সমর্থিত ওই চক্রটি তাঁকে এলকায় সব কাজে বাধা দিত।
তিনি আরা বলেন, “এক পর্যায়ে তিনি বেঁচে থাকার তাগিদে কয়েক মাস আগে স্থানীয় আওয়ামীলীগ দলীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মীর শওকাত আলী বাদশার হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগে যোগদান করেও তার বেঁচে থাকা সম্ভব হলো না।”
আমাদের ছোট দুটি সন্তান রয়েছে। এখন আমি এদের নিয়ে কোথায় যাব বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি।
এলাকার কারা সেদিন তাকে ধরে নিয়ে প্রহার করেছে জানতে চাইলে নিরাপত্তার আশংকায় তাদের নাম বলতে রাজি হননি তিনি।
তবে কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শমসের আলী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, মুক্ত শেখ পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে কচুয়া থানায় একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে।
গত ১০ মার্চ স্থানীয় লোকজন তাঁকে পাঁচ বোতল ফেনসিডিলসহ ধরে গনপিটুনী দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একটি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে পুলিশী প্রহরায় তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।