রামপাল উপজেলার পেড়িখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বাবুলকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় রোববার (১৫ মার্চ) বিকালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত এক ফ্যাক্সবার্তায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ভোটার তালিকা হাল নাগাদের কাজে নিয়োজিত এক স্কুল শিক্ষিকাকে মারধর করার মামলায় ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে পুলিশ সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দিয়েছে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে।
বাগেরহাটের রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু রাফা মো. আরিফ বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব স্বাক্ষরিত একটি ফ্যাক্সবার্তা পাওয়ার কথা স্বীকার করে ইউএনও বলেন, ফৌজদারী মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ইউপি চেয়ারম্যানকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে। নির্বাচিত জন প্রতিনিধির বিরুদ্ধে কোন মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালত গ্রহণ করলে তিনি চেয়ারম্যান পদে থাকতে পারবেন না। তা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।
তাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় শাখা তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে।
রামপাল উপজেলার পেড়িখালী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের বড় কাঁঠালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা খাদিজা ইয়াসমিন রাতে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন কমিশন থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভোটার তালিকা হাল নাগাদ করার ঘোষণা দেয়। সেই ঘোষণা অনুযায়ী বাগেরহাটেও কাজ শুরু হয়। গত বছরের ১৪ জুন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার পেড়িখালী ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের বড় কাঁঠালী গ্রামে ভোটার তালিকা হাল নাগাদ কাজ করার দায়িত্ব পাই।
এসময়ে অন্য ইউনিয়নের আব্দুল মজিদ নামে (আগের ভোটার আইডি কার্ডধারী) এক ভোটার ৮ নং ওয়ার্ডে নতুন করে ভোটার হওয়ার আবেদন করে। তার ওই ভোটার হওয়া আইন পরিপস্থি হওয়ায় তাঁকে আমি ফিরিয়ে দেই। ওই ব্যক্তি বিষয়টি পেড়িখালী ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবুলকে জানালে তিনি ক্ষুব্দ হয়ে বড় কাঁঠালী বাজারে এসে আমার স্বামী মো. রবিউল আলম খোকনের দোকানে বসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমাকে মারধর করে।
পরে নির্বাচন কমিশন ঘটনা জানতে পেরে আমাকে সরকারী কাজে বাঁধাদানের অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে মামলা করতে বললে আমার স্বামী বাদী হয়ে ১০ জুলাই রামপাল থানায় একটি মামলা করেন।
পাঁচ মাস তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৪ ডিসেম্বর বাগেরহাট জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মাহাতাব উদ্দিন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
মামলাটি বর্তমানে বাগেরহাটের বিচারিক হাকিমের আদালতে বিচারাধীন রয়েছে এবং বাবুল চেয়ারম্যান জামিনে আছেন। আদালতের বিচারক আগামী ২ এপ্রিল মামলাটির শুনানীর দিনধার্য করেছেন বলে জানান তিনি।