মধ্যরাত। উদ্ধার কাজে ব্যস্ত ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, নৈবাহিনী, কোস্টগার্ড, র্যাব ও পুলিশ।
সবার চেষ্টা মংলায় সেনা কল্যাণ সংস্থার নির্মাণাধীন এলিফ্যান্ট ব্র্যান্ড সিমেন্ট ফ্যাক্টরির ছাদ ঢালাইয়ের সময় ধ্বসে পড়া ভবনের নিচে আটকে পড়া মানুষগুলোকে উদ্ধার করা। হোক সে জীবিত কিম্বা মৃত। তবু যতো দ্রুত সম্ভব সবাইকে উদ্ধারের প্রচেষ্টা।
সব ক্লান্তি ভুলে নিঘুম রাতে এসব প্রশিক্ষিত বাহিনীর সঙ্গে দেখা গেলো ১৫ জন স্বল্প দক্ষ কিশোর ও তরুণ উদ্ধারকারীদের। এই গভীররাতেও তারা সমানতালে কাজ করে যাচ্ছে অন্য উদ্ধারকারীদের সঙ্গে।
আত্মমানবতার সেবায় নিয়োজিত এই ১৫ তরুণ দুর্ঘটনার খবর শুনে দুপুর দুইটা থেকেই আছে ঘটনাস্থলে। পানি ও কিছু শুকনা খাবার নিয়ে রোভার স্কাউট ও নৌ স্কাউটের এই ১৫ তরুণ উদ্ধারকারী ঘটনাস্থলে আসে। সেই থেকেই সেবার ব্রত নিয়ে হাত লাগায় উদ্ধার কাজে।
তাদের দলের সবচেয়ে কনিষ্ঠ সদস্য মংলা সেন্ট পলস্ স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র নৌ স্কাউটের সদস্য বনি আমিন খান। হালকা শীতের গভীররাতেও ক্লান্তিহীন চোখে উৎকণ্ঠা নিয়ে উদ্ধার কাজে ঘাম ঝরাচ্ছে সে।
বনি আমিন বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলে, মানুষের জন্য কাজ করতে পারাটাই বড় কথা। আমি আমার জায়গা থেকে উদ্ধার কাজে সাহায্য করতে চেষ্টা করছি। লোহার রড আর কংক্রিটের ভেতর আটকা পড়া মানুষগুলোকে উদ্ধারের চেষ্টা করছি।
উদ্ধার কাজে অংশ নেওয়া এই তরুণ স্কাউট দলের প্রধান রোভার মেট মো. আজব আলী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, ভবন ধসের খবর পেয়ে দুপুরেই তারা ছুটে আসেন মংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে। তখন থেকেই দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী বিভিন্ন সংস্থাকে সাহায্য করছেন।
কারো নির্দেশ বা অনুরোধে নয়, স্বেচ্ছায় তারা এখানে এসেছেন। উদ্ধার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখানে থাকার প্রত্যয় জানিয়ে ওই রোভার মেট বলেন, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই সেবার দীক্ষা নিয়ে তাদের এই নৌ স্কাউট দল এখানে কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে একটায় সেনা কল্যাণ সংস্থা পরিচালিত মংলায় এলিফ্যান্ট ব্রান্ড সিমেন্ট ফ্যাক্টরির নির্মাণাধীন ৪০ ফুট উঁচু ছাদের ঢালাইকালে ধসে পড়ে।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাত পৌনে চারটা পর্যন্ত ধ্বংসস্তুপ থেকে ৬টি মৃতদেহ ও ৬৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে উদ্ধারকারীরা।