অভিমান করে কিছু দিন আগে সাতক্ষীরা থেকে খুলনায় চলে আসে বাকি বিল্লাহ। সেখানে সে ভাড়া বাসায় থাকত, আর নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করত।
অনেক চেষ্টা করেও তার মান ভাঙাতে পারিনি। পারিনি বাড়ি ফিরিয়ে নিতে। ঠিক মত খবরও পেতাম না ওর। যখন শুনেছি মংলায় একটি ভবন ধসে গেছে। মনের ভেতরে কেমন যেন কামড়ে ওঠে। অনেক চেষ্টা করেছি যোগাযোগের, কিন্তু পারিনি।
কথাগুলো বলছিলেন নিহতের সারিতে থাকা বাকি বিল্লাহর বাবা সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়ার বাসিন্দা মো. শামসুর রহমান।
তিনি বলেন, বার বার ফোন দিয়েছি ওকে। কিন্তু কেউ ফোন রিসিভ করেনি। শুধুই বেজে গেছে। পরে মংলায় এক পরিচিত জনের মাধ্যমে জানতে পারলাম ভবন ধসে মারা যাওয়াদের মধ্যে আমার ছেলেও আছে।
খানিকটা থেমে নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও বলতে শুরু করেন তিনি, ছোট বেলা থেকেই একটু রাগি ও অভিমানি ছিলো বাকি। একটুতেই রেগে যেত। বছরখানেক আগে দেখা হয়েছিল ওর সঙ্গে। একমাত্র নাতি সৈকতকেও দেখিনা অনেকদিন। ভেবেছিলাম এবার ওদের বাড়ি নিয়ে যাব। ছেলেকে আর এত কষ্ট করতে দেবো না।
এক সঙ্গেই ব্যবসা করব দু’জনে। কিন্তু এইভাবে অভিমান করে চলে যাবে তা ভাবতেও পারিনি।
শক্রবার সকালে সন্তানের মৃতদেহ খুঁজতে মংলা বন্দর হাসপাতালে আসেন নিহত বাকি বিল্লাহর (২২) বাবা শামসুর রহমান। এসময় হাসপাতালের মর্গের সামনে বসে বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে এসব কথা বলেন তিনি।
এসময় বাকি বিল্লার স্ত্রী খাদিজা ও তিন বছরের ছেলে সৈকতের বোবা কান্নায় ভারি হয়ে ওঠে হাসপাতালের পরিবেশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সেনা কল্যাণ সংস্থা পরিচালিত মংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরির নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ঢালাইকালে ধসে পড়ে। এ ঘটনায় নিহত হতভাগাদের একজন বাকি বিল্লাহ।