পূর্ব সুন্দরবনে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তিন দস্যু নিহতের ঘটনায় পৃথক দু’টি মামলা দয়ের করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
বৃহস্পতিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় র্যাব-৮ এর ডিএডি (উপ-সহকারী পরিচালক) আশরাফ আলী বাদী হয়ে শরণখোলা থানয় এ মামলা দায়ের করেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবর সকালে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের চাঁন্দেরশ্বর ফরেস্ট ক্যাম্প সংলগ্ন কাটলার খালে দস্যুদের সাথে তাদের বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে বলে দাবি র্যাবের।
বাগেরহাটের শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল ইসলাম বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে জানান, পৃথক দুটি মামলা করে র্যাব উদ্ধার হওয়া ৩ বনদস্যু লাশ, আগ্নেয়াস্ত্র ও অনান্য মালামাল শরণখোলা থানায় হস্তান্তর করেছে।
ময়না তদন্তের জন্য লাশ তিনটি বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মামলায় সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও হত্যার অভিযোগে নিহত ৩ জনসহ সাগর-সৈকত বাহিনীর অজ্ঞাত আরো ১০/১২ জনকে আসামি করা হয়েছে বলে ওসি জানান।
র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল ফরিদুল আলম বাগেরহাট ইনফোকে বলেন, সুন্দরবনের ওই এলাকায় দস্যুরা অবস্থান করছে জানতে পেরে বৃহস্পতিবার সকালে মেজর আদনানের নেতৃত্বে র্যাবের একটি দল সেখানে অভিযানে যায়।
“এ সময় দস্যুরা র্যাবকে লক্ষ করে গুলি ছুড়লে তারাও পাল্টা গুলি করে। সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত চলে গোলাগুলি। পরে দস্যুবাহিনীর সদস্যরা বনের গহীনে পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে তিনটি গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।”
নিহতরা বনদস্যু ‘সাগর-সৈকত বাহিনী’ নামে একটি দস্যুদলের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে সাগর ও সুন্দরবনের মৎস্যজীবীদের জিম্মি করে চাঁদা আদায়ের আসছিল।
স্থানীয় জেলেরা নিহতদের মধ্যে দু’জনকে শনাক্ত করেছেন। এরা হলেন- বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার হাড়িটানা গ্রামের মোস্তফা মেম্বরের ছেলে সোহেল (২৫) এবং একই উপজেলার পদ্মা গ্রামের সোনা মোল্লার ছেলে সাদ্দাম হোসেন মোল্লা (২৭)। অন্যজনের পরিচয় জানা যায়নি।
বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বাগেরহাট ইনফো ডটকমকে বলেন, বনদস্যু সাগর-সৈকত বাহিনী প্রায় ৩ বছর ধরে সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগরে জেলে নৌকায় ডাকাতি ও জেলেদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করে আসছে। এ দলের অধিকাংশ সদস্য বরগুনা জেলার, বিশেষ করে পাথরঘাটা উপজেলার বাসিন্দা বলে শোনা যায়।
র্যাব-৮ এর উপ-অধিনায়ক মেজর আদনান কবির বাগেহরাট ইনফো ডটকমকে জানান, বন্দুকযুদ্ধ শেষে ওই এলকায় তল্লাশী চালিয়ে র্যাব সদস্যরা নিহত ৩ দস্যুর লাশ, সাগর-সৈকত বাহিনীর নামে টোকেনসহ (চাঁদা আদায়ের রসিদ) ৯টি একনলা বন্দুক, ২টি পাইপগান, ১টি পিস্তল, ৬টি দেশিয় অস্ত্র, ৫৫ রাউন্ড তাজা গুলি, ১টি মোবাইল ফোন, বিপুল পরিমাণ খাদ্যসামগ্রী ও ১টি সোলার প্যানেল উদ্ধার করে।